Tuesday, July 30, 2013

ব্যক্তিত্ব

ব্যক্তিত্বের পূর্ব কথা:-
আমরা জানি মানুষ বলতে মানবতা নয়; কিন্তু মানবতা বলতেই মানুষ। মনবীয় গুণে গুণান্বিত ব্যক্তিই মানবতার ধারক ও বাহক। ব্যক্তি বলতে ব্যক্তিত্ব নয়; কিন্তু ব্যক্তিত্ব বলতেই ব্যক্তি। আর তাই ব্যক্তি বলতে কোনো সাধারণ একজন মানুষকে বুঝায়।
এানুষ যেখানে ব্যক্তিত্ব ও মানবতা সেখানে। কিন্তু মানুষ যেখানে নেই; ব্যক্তিত্ব ও মানবতা সেখানে নেই। মানব জীবনের সবকটি গুণাবলীর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হল ব্যক্তিত্ব ও মানবতা। আর ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘাটানোর জন্য ব্যক্তি স্বধীনতা প্রয়োজন। কারণ সুপ্ত মেধা, সুপ্ত ক্ষমতা, সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটানোর নামই ব্যক্তিত্ব বিকাশ।
জীবন ধারণের পক্ষে যেমন খদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান ইত্যাদি অপরিহার্য তেমনি জীবন যাপনের জন্যও ব্যক্তিত্ব অপরিহার্য। ব্যক্তিত্ব বলতে আমরা সাধারণত বুঝি আমাদের নিজস্ব সত্তার যে সমস্ত গুণ আছে সেগুলোকে সুষ্ঠ বিকাশের সঠিক পথে চালানো। অর্থাৎ এক কথায় নিজস্ব গুণাবলীর প্রকৃত প্রতিফলন ঘটানো। মানব জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপেই এর প্রয়োজন রয়েছে। আবার ব্যক্তিত্ব বলতে কিন্তু উচু কণ্ঠস্বর, ভাবভঙ্গি, দৃষ্টি, চেহারা ও অস্বাভাবিক উচ্চতাকে/শরীরকে বুঝায়না।

ব্যক্তিত্ব যা

ব্যক্তিত্ব হল এমনই কোনো সীলমোহর যার ছাপ আমরা মানুষের উপর রেখে যাই। ব্যক্তিত্ব হল কার্যকরী সম্পদ।-হারর্বার্ড ক্যাশন
ব্যক্তি জীবনের ব্যক্তিত্বের সীমারেখা নির্ধারিত হয় কথাবার্তায়, আচার-আচরণে, চালচলনে, ধ্যান-ধারণায় ও মন-মানসিকতায়।
সাফল্যের চাবীকাঠি
চৌম্বক শক্তি
অগ্রণী শক্তি বা এগিয়ে নেয়ার শক্তি
মানুষের চালনা শক্তি
একটি আদর্শ, একটি দর্শন
চারিত্রিক গুণাবলী

ব্যক্তিত্ব হীনতা যা ঘটায়

ব্যক্তিত্বহীনদের আত্ম-নিয়ন্ত্রণ থাকেনা
আত্ম-নির্ভরশীল হতে পারেনা/পরনির্ভরশীল হয়ে পরে
আত্ম-জ্ঞান, আত্ম-শিক্ষা, আত্ম-উপলব্দি থাকেনা
আত্ম-বিশ্লেষণ, আত্ম-সমালোচনা, আত্ম-জিজ্ঞাসা ও আত্ম-শুদ্ধি করতে পারেনা
আত্ম-ত্যাগের মন-মানসিকতা হারিয়ে ফেলে
আত্ম-সম্মান করেনা
মানবতা লোপ পায়
ইচ্ছা, স্বপ্ন, লক্ষ্য হারায়
ভয় পায়
হীনমন্যতায় ভোগে
কর্মদক্ষতা হারায়
গর্বোপরি ব্যর্থ হয়

ব্যক্তিত্ব অর্জনের ফলে যা হয়

সমস্ত বাধা, ভয়, হীনমন্যতা, দুশ্চিন্তা, সন্দেহ, ঘৃণা, ঈর্ষা, হতাশা, ক্ষতি, ব্যর্থতা, কদর্যতা, তিক্ততা, কষ্ট, অশান্তি ইত্যাদি দূর/জয় করা যায়
প্রয়োজনের সময় কর্তৃত্বের অবস্থা দান করবে। ব্যক্তিত্বের শক্তি আপনার ধারণার বাইরে আপনাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
গ্রহণযোগ্যতা লাভ করা যায়
প্রতিষ্ঠিত হওয়া যায়
প্রভাব বিস্তার করা যায়
নেতৃত্ব দেয়া যায়
জনপ্রিয় হওয়া যায়/ খ্যতি লাভ হয়
সাফল্য পাওয়া যায়
শ্রদ্ধা পাওয়া যায়
ক্ষমতা দখল করা যায়
বন্ধু লাভে সহায়ক হয়
বেচে থাকার আনন্দ পাওয়া যায়
নিজেকে জানা/ আবিষ্কার করা যায়
অন্ধভাবে ভুল করার হাত থেকে রক্ষা করবে

ব্যক্তিত্ব

আভিধানিক অর্থ-ব্যক্তি বিশেষের বৈশিষ্ট, স্বপ্রধান্য, আত্মকেন্দ্রিকতা, ব্যক্তিগত অবস্থা, বিশেষভাবে খ্যাতিমান, কোনো ব্যক্তির শারীরিক বৈশিষ্ট, স্পষ্টতা, পার্থক্য ইত্যাদি। personality, individualism, distinctness
ব্যক্তিত্ব গঠন
প্রখর বাস্তব বুদ্ধি, চতুরতা ও সহিষ্ণুতা থাকলে পুঁথিগত শিক্ষা না থাকা সত্তেও ব্যক্তিত্ব পূরণে বাধা হবে না। কারণ ব্যক্তিত্ব ধীরে ধীরে গড়ে উঠে। তার জন্য অনেক পরিশ্রম করতে হয়।
আমাদেও সহজাত ক্ষমতাকে নমনীয় করে তুলতে হবে। নমনীয় করতে হবে তার ইচ্ছা, বাসনা, আবেগ আর কল্পনাকেও। আর এই পথধরেই ব্যক্তিত্বকে গঠন করতে হয়।

এছাড়া যা করতে হবেঃ-
তর্ক করা যাবে না (যুক্তিপূর্ণ তর্ক হতে হবে)
কথার সাথে কাজের মিল রাখা
করুনার পাত্র হওয়া যাবেনা
শুদ্ধ ভাষায় কথা বলতে হবে
নিরপেক্ষভাবে কথা বলা
একান্ত গোপন বিষয় কাউকেই বলা যাবেনা
নিজের ব্যক্তিগত বিষয়ে কাউকে নাক গলাতে দেয়া যাবেনা
অনধিকারচর্চা করা যাবে না
অন্যের মতকে শ্রদ্ধা করতে হবে
জীবনের ভারসাম্য রক্ষা করা
স্মার্ট হতে হবে-(স্মার্ট বলতে আমরা যা বুঝি)
-পরিচ্ছন্ন
-দক্ষ
-চটপটে
-বুদ্ধিমান
-উপস্থিত বুদ্ধিও অধিকারী
দায়িত্ব ও কর্তব্য ঠিক মত পালন করা
-মাতাপিতার প্রতি
-দেশের প্রতি

ব্যক্তিত্বের অনুভুতি/ যাদু :-

কার সাথে কথা বলছেন তিনি ভাবতে চাননা, তার কথা শুনে যান
তার চমৎকার ধৈর্য্য আছে
মানুষের সাথে মেলমেশা করতে তার কোনোরকম অসুবিধা হয়না
যেখানেই যান সেখানেই তিনি বেশ মানিয়ে চলতে পারেন
তিনি কখনই স্বার্থপর মানুষ নন
যে লোকই তার সংস্পর্শে আসে তাকেই বলতে শোনা যায় “কেমন চমৎকার মানুষ, আহা ওর মতো যদি হতে পারতাম”। এর ভিতরে অনেক কিছু আছে, জিনিয়াস ইত্যাদি ইত্যাদি।
মনোরঞ্জন করার ওই যাদু যদি আমার থাকত।

ডেল কার্নেগীর ব্যক্তিত্বের পরীক্ষা:-

একজন মানুষের সঠিক ব্যক্তিত্ব প্রকাশের চাবিকাঠি চারটি। এই চারটি বিষয় নির্ভর করেই গড়ে ওঠে যেকোনো মানুষের ব্যক্তিত্ব। যথাঃ-
১.আমরা কি করি?
২.আমাদের বাহ্যিক আকৃতি কী?
৩.আমরা কীভাবে কী কথা বলি?
৪.আমাদের সেই বলার পদ্ধতি কী রকম?

ব্যক্তিত্বের বিকাশ:-

মানুষের জ্ঞান, বিশ্বাস, আচার-আচরণ, রুচী, অভ্যাস ইত্যাদি মিলিয়ে তার ব্যক্তিত্ব। যাদেও মধ্যে মানবিক গুণের চেয়ে পাশবিক গুণ বেশি অর্থাৎ যারা চরিত্রহীন তাদেরকে ব্যক্তিত্বহীন বলা যায়। এ্যাড লারের মতে- ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব পরিবেশ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। ব্যক্তির প্রধান উপাদান হচ্ছে তার চরিত্র। কুপরিশেকে জয় করে যদি চরিত্রকে অক্ষত রাখা যায়, সেখানে ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব সুন্দর হয়ে ফুটে উঠে।
চরিত্র বলতে বুঝায় মানবীয় ও নৈতিক গুণাবলী সমৃদ্ধ আচার ব্যবহার চাল-চলন। ব্যক্তির মূল উৎস হচ্ছে মানসিকতা। বুদ্ধি ও আবেক দ্বারাই মানসিকতা গড়ে উঠে। মানসিকতা আবার নিয়ন্ত্রিত হয় জ্ঞান দ্বারা। জ্ঞান হচ্ছে ব্যক্তিত্বের ১ম/ মূল উপাদান। যার মধ্যে জ্ঞান আছে তার মধ্যে ব্যক্তিত্ব অবশ্যই থাকবে। একারণে ব্যক্তিত্বকে সুন্দর করতে হলে জ্ঞানের সাধনা করা প্রয়োজন। ব্যক্তিত্বের ২য় অনুভূতি। যাদের অনুভূতি কম তারা সাধারণত ব্যক্তিত্বহীন হতে পারে। জ্ঞানীরা অনুভূতি সম্পন্ন বলেই মান সম্মানবোধ তাদের প্রখর। ব্যক্তিত্বকে ছোট করতে পারে এমন কাজ থেকে তারা সদা-সর্বদা বিরত থাকে।

আমরা এখন ব্যক্তিত্বের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উপাদান সম্পর্কে জানব। যেমন:- জ্ঞান, পেশাদারিত্ব,

জ্ঞান:-

১.জ্ঞান হচ্ছে অনুধাবনের ফল বা তথ্য ( তথ্যঃ- উপাত্ত (ডাটা) প্রক্রিয়াকরণের পর নির্দিষ্ট চাহিদার প্রেক্ষিতে যে সুশৃঙ্খল ফলাফল পাওয়া যায় তাকে তথ্য বলে)
২.জ্ঞান হচ্ছে নিয়মতান্ত্রিক ও বস্তুভিত্তিক বিশ্লেষণপদ্ধতি
৩.জ্ঞান হচ্ছে যুক্তিভিত্তিকভাবে আহরিত তথ্য ও তার ভিত্তিতে যুক্তিভিত্তিক সিদ্ধান্তগ্রহণের পদ্ধতি।

জ্ঞান অর্জন করার পদ্ধতিঃ-

দোয়া ও প্রার্থনা করে
অনুভব ও অনুমানের মাধ্যমে জ্ঞানার্জন করা যায়
চিন্তাশক্তি প্রয়োগ করে
অভিজ্ঞতা থেকে
অতিত থেকে
জ্ঞানীদের সাথে মিশে
মূর্ত জগতকে দেখে
মূর্ত এবং বিমূর্ত জগত সম্পর্কে চিন্তা গবেষণা করে
শুনে ও ভ্রমণ করে
বই পড়ে-
জীবনী (হাসান আল-বান্না, ইমাম শামায়েল, আনোয়ার পাশা, ওসামা বিন লাদেন, হিটলার)
ধর্মীয় (কুরআনা, হাদীস, বাইবেল, মহাভারত)
বিখ্যাত লেখকদের লেখা (ডঃ ইউসূফ আল কার্যাভি, সাইয়েদ কুতুব, ডাঃ জাকির নায়েক)
সাধারণ জ্ঞান সম্পর্কিত বই
বিজ্ঞান ও শিক্ষামূলক সিরিজ (সাইমুম, ক্রুসেড, রিসালায়ে নূর)
টিভি দেখে (ডিসকভারি, পিস টিভি, দিগন্ত টিভি)
রেডিও শুনে (টুডে, ফুর্তি)
পত্রিকা পড়ে
-দৈনিক (আমার দেশ, নয়াদিগন্ত, ইত্তেফাক)
-সাপ্তাহিক (
-মাসিক (কিশোর কণ্ঠ, আলোর দ্বীপ, পৃথিবী, মদীনা)
নেট সার্স করে
1.http://en.wikipedia.org/wiki/Yusuf_al-Qaradawi
2.http://en.wikipedia.org/wiki/Hassan_al_Banna
3.www.irf.net
4.www.quotationspage.com
5.www.mindstools.com
6.www.telesalesprompt.co.uk
7.www.achievement.org
প্রশিক্ষণ নিয়ে
সমস্ত পেশার লোকদের সাথে মিশে

আমরা নাইটিঙ্গলের নাম জানি তিনি নার্স পেশায় বিখ্যাত হয়েছিলেন। ওসামা বিন লাদেন জঙ্গি পেশায় বিখ্যাত হয়েছিলেন। তেমনি আমি কিছু পদ্ধতি পেয়েছি সেটিই আপনাদের কাছে শেয়ার করলাম। আশাকরি আপনাদের কাজে লাগবে।

পেশাদারিত্বঃ-

নিজের স্বপ্ন লেখা ও লক্ষ নির্ধারণ করা
যে সেক্টরে কাজ করেন সেখানের দায়িত্বশীল/ লিডারদের সাথে সময় দেয়া নিজের পেশাকে বুঝার জন্য
ডিসিপ্লিন/ সিস্টেম মানা
ট্রেনিং করা বা তথ্য সংগ্রহ করা
পেশার যে কোনো মিটিংয়ে উপস্থিত থাকা
নিয়মিত অফিসে আসা
উদ্যেগী হওয়া
পেশাটাকে ভালবাসা
অফিসিয়াল টুলস সাথে রাখা (পেড, কলম, ব্যাগ, লিগ্যাল পেপার, ব্রুশিয়ার, কেটালগ ইত্যাদি)
প্রপার ড্রেসকোড
ধৈর্য ধরা ও লেগে থাকা
প্রো-একটিভ, ক্রিয়েটিভ ও লিডার হওয়া
প্ল্যান করে কাজে নেমে পড়া
অভিজ্ঞতা অর্জন করা (কিভাবে অভিজ্ঞতা অর্জন করা যায়)
-দীর্ঘদিন লেগে থেকে
-পরিবেশ থেকে
-প্রশিক্ষণ নিয়ে
-অপরের ভুল বা বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে
-নিজের ভুল থেকে
-সব ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে
-স্ট্যামিনা/ কঠোর পরিশ্রম করে

মানসিকতাঃ-

ইমাজিনেশন করতে হবে
মেডিটেশন করতে হবে (না জানলে যে বইগুলির সহায়তা নিবেন)
১.The power of positive thinking and attitude-Remez Sasson
২.সাফল্যের চাবিকাঠি কোয়ান্টাম মেথড- মহাজাতক সহিদ আল বোখারি
৩.আত্ম উন্নয়ন-বিদ্যুৎ মিত্র
৪.নিজেকে জানো- বিদ্যুৎ মিত্র
৫.সুখ-সমৃদ্ধি- বিদ্যুৎ মিত্র
৬.আত্মসম্মোহন- বিদ্যুৎ মিত্র
৭.নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারবেননা-ডাঃ ড্যানিয়েল জি আমেন
৮.চেতনা অতিচেতনা নিরাময় ও প্রশান্তি-মহাজাতক সহিদ আল বোখারি
মটিভেশনাল বই পড়তে হবে
১.বিগব্যাঙ থেকে মানুষ-রুশো তাহের
২.ব্যক্তিত্ব বিকাশ ও সাফল্যের সহজ উপায়-ডেল কার্নেগী
৩.আপনি প্রতিষ্ঠিত যদি হতে চান-ডেল কার্নেগী
৪.ধনী হতে কদিন লাগে-হারবার্ট ক্যাশন
৫.মানুষকে বাগ মানানোর কলাকৌশল-লেসলি টি গিবলিন
৬.মোরা বড় জতে চাই-আহসান হাবিব ইমরোজ
৭.সবার আগে নিজেকে গড়ো-আব্দুস্ শহীদ নাসিম
৮.ডা: লুৎফর রহমান শ্রেষ্ঠ রচনাসমগ্র
৯.বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ১০০ মনিষি-মাইকেল এইচ হার্ট
১০.দৃষ্টিভঙ্গি বদলান জীবন বদলে যাবে-গোলাম হাফিজ
১১.সফলতার রহস্য-মো: আয়াজ করিম
12.Freedom is not free-Shiv Khera
13.Living with honour-Shiv Khera
14.The 7 habits of highly effective people-Stephen R Covey
15.The magic of thinking big-David J.Schwartz Phd
16.Business school-Robert T Kiyosaki
17.Rich dad poor dad-Robert T Kiyosaki
18.Questions are the answer-Allan Pease
19.The greatest opportunity in the history of the world-John Kalench
20.Success and creativity within seven days-Garath Luis
অভিজ্ঞ, জ্ঞানী এবং উচু ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষের সাথে মিশতে হবে
যারা বড় বড় স্বপ্ন দেখে তাদের সাথে মিশতে হবে
যারা গোছালো, লক্ষ্য-উদ্দেশ্য আছে, পজিটিভ, ক্রিয়েটিভ, ও প্রো-একটিভ তাদের সাথে মিশতে হবে
বড় ও প্রশস্ত রাস্তায় যেতে হবে
সমুদ্রে যেতে হবে
বড় সমাবেশ, মিছিল, মেরাথন ট্রেনিং ও বড় হাট-বাজারে যেতে হবে
মটিভেশনাল সিডি, ভিসিডি, ডিভিডি দেখতে হবে
সেলিব্রেশন প্রোগ্রামে যেতে হবে
ইনটারনেট সার্স করতে হবে
পাহার পর্বতে যেতে হবে


“দৃষ্টিভঙ্গি বদলান জীবন বদলে যাবে”

“দৃষ্টিভঙ্গি বদলান জীবন বদলে যাবে”। এই কথাটির সাথে আমরা সবাই কম বেশি পরিচিত । কিন্তু দৃষ্টিভঙ্গি শব্দটি’র প্রকৃত মানে এবং ব্যাখ্যা সবার কাছে পরিস্কার কিনা আমার জানা নেই । দৃষ্টিভঙ্গি’র ইংরেজী প্রতিশব্দ attitude। কেউ যদি আপনাকে বলে আপনার অ্যাটিচিউট ঠিক করেন । তখন স্বাভাবিক ভাবে আমরা ধরে নেই যে, আমার ব্যবহার মনে হয় ঠিক করতে বলছে । কথাটি আপাত দৃষ্টিতে সত্য হলেও ‘দৃষ্টিভঙ্গি’ বিষয়টি’র ব্যপকতা ও প্রভাব অনেক। এ নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আশা করি আপনারা-ও এই বিষয়ের উপর আপনাদের লেখাগুলোও আমাদের সাথে শেয়ার করবেন ।

দৃষ্টিভঙ্গি শব্দ টি কে নানান ভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে । আমার মতে- ভিতর ও বাহির মিলে যে পূর্ণাঙ্গ মানুষ, তার প্রকাশ ভঙ্গি কে তার দৃষ্টিভঙ্গি বলে ।

সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি জীবনকে করে সুন্দর । সম্পর্কগুলোকে করে দৃঢ় । কর্মক্ষেত্রে আপনি থাকবেন সফলদের চেয়ে সফল । ব্যাক্তিগত পর্যায় থেকে শুরু করে সামাজিক তথা রাষ্ট্রিয় পর্যায়ে যেখানেই আপনি থাকেন না কেন আপনাকে এনে দিবে এক অনন্য সফলতা। আপনি যতই প্রতিকূল পরিস্থিতেই থাকেন না কেন আপনি তা উতরে যাবে অনায়াসে । রক্ষা করবে হোঁচট খাওয়া থেকে । মনে থাকবে প্রশান্তি । সহজ স্বতঃস্ফূর্ততায় আপনি এগিয়ে যাবেন সফল জীবনের পথে ।

সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি নিজের মাঝে ধারণ করা একটি দীর্ঘ পথ পরিক্রমার বিষয় । আপনি হয়তো জানেন- এ পৃথিবীতে পাখি জন্ম গ্রহন করেই পাখি কিংবা বানর জন্ম গ্রহন করেই বানর হয় । কিন্তু মানুষ একমাত্র জীব যা জন্মগ্রহন করেই নিজেকে মানুষ হিসেবে আত্ম প্রকাশ করতে পারে না । পাখির জন্ম গ্রহন করার পর মুক্ত আকাশে ডানা মেলে দিক থেকে দিগন্তে উড়ে বেড়ায়ে প্রমাণ করতে হয় না যে সে পাখি । মানুষকে জন্ম গ্রহন করার পর দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে নিজেকে ধরনীর বুকে প্রকৃত মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হয়।

মানব শিশু যখন এ পৃথিবী আসে তখন তাকে তুলনা করা হয় ইতর শ্রেণীর প্রাণীর সঙ্গে।কারণ তখন সে মূলত ইন্দ্রীয় দ্বারা তাড়িত। পরবর্তীতে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ধীরে ধীরে নিজেকে সে প্রকৃত মানুষ হিসেবে আবিস্কার করে।  আর এই ভিন্ন ভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই একেক জনের দৃষ্টি ভঙ্গি একেক ভাবে গড়ে উঠে। প্রাথমিক দৃষ্টিভঙ্গি মূলত যেই জায়গা বা প্রক্রিয়ার মধ্যে গড়ে উঠে তা হল-

১.পরিবার ।

২.প্রতিবেশী ।

৩.ধর্ম ।

২.শিক্ষা ।

৪.সমাজ ।

৫.দেশ ।

আশা করছি, আপনি উপরের যে কোন একটি বিষয় নিয়ে আপনার চিন্তাগুলো এবং আপনার দৃষ্টিভঙ্গি এর প্রভাব আমাদের সাথে শেয়ার করবেন। ভালো থাকুন।

Kazi Ashraful Islam

মানুষের কল্যাণে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং

মার্কেটিং বা বিপণনের একটি নতুন ও অনন্য আবিষ্কার মাল্টিলেভেল মার্কেটিং। আমেরিকার বিখ্যাত কেমিস্ট ডঃ কাল রেইন বোর্গ তার উৎপাদিত কৃত্রিম ভিটামিন (যা আয়োডিন ও ভিটামিন ’ এর  সংমিশ্রনে তৈরী) বাজারজাত করনের জন্য সর্বপ্রথম বহুমাত্রিক পদ্ধতি এর ধারনা প্রবর্তন করেন। পাশাপাশি ক্যালিফোনিয়া ভিটামিন,নামে একটি কোম্পানী প্রতিষ্ঠা করেন যা বিশ্বের প্রথম নেটওয়ার্ক মার্কেটিং কোম্পানী বলে স্বীকৃতি পায়। কারন ১৯৪০ সালের শুরুতে এটিই একমাত্র প্রতিষ্ঠান যার বিক্রয় কার্যক্রম ছিল বহুস্তরে বিভক্তযে ধারনা হতে জন্ম নেয় বহুমাত্রিক বিপণন পদ্ধতি বা মাল্টিলেভেল মার্কেটিং পদ্ধতি। আমরা বিপণন বা মার্কেটিং এর বিভিন্ন ধরণ বা কৌশল দেখে থাকি বিশেষ কয়েকটি ধরণ হলোঃ 

(ক) সরাসরি বিপণন পদ্ধতি (Direct Selling) 
(খ) ট্রেডিশনাল পদ্ধতি (Traditional System) 
(গ) টেলি মার্কেটিং (Tele Marketing) 
(ঘ) ইন্টারনেট মার্কেটিং (Internet Marketing)ইত্যাদি। 

যে কোন বিপণন পদ্ধতির চেয়ে এমএলএম পদ্ধতির বেশ কিছু পার্থক্য লক্ষ্যণীয় তম্মধ্যে অসংখ্য মানুষেরঅংশগ্রহণের বিষয়টি অন্যতম অর্থাৎ যেখানে ক্রেতাই পরিবেশক বা কোম্পানীর প্রতিনিধি হিসেবে কাজের সুযোগ পায়। মধ্যস্বত্বভোগীদের সংখ্যা কমিয়ে বা এড়িয়ে কোম্পানী কর্তৃক লাভের অংশ কিংবা মার্কেটিং খরচ সাশ্রয় করে সাধারণ ক্রেতা বা পরিবেশকদের মাঝে বন্টন করা হয়,ক্রেতা বা পরিবেশকগণ টীম বা দল গঠন করে নিজেদের বিক্রয় বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়। এভাবে অসংখ্য মানুষ পার্টটাইম বা ফুল টাইম আয়ের পথ হিসেবে এ পদ্ধতিকে বেছে নেয়ার সুযোগ পায় সংক্ষেপে আমরা দেখব কেন এমএলএম ব্যবসাকে জনকল্যাণকর বলা হয়ে থাকেঃ
  1. এমএলএম ব্যবসায় সরাসরি ক্রেতাগণ জড়িত থাকে বিধায় ক্রেতারা নিজেদের পছন্দসই পণ্য বেছে নেয়ার সুযোগ পায়
  2. এমএলএম ব্যবসায় পণ্য বিক্রয়ের উপর কমিশন অর্জন করা যায় বিধায় অসংখ্য মানুষ এ ব্যবসা হতে আয়ের সুযোগ পায়
  3. টীম বা দল গঠন করে দীর্ঘমেয়াদী ও রয়েলটি আয়ের সুযোগ থাকে বিধায় মাল্টিলেভেল বা নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতিকে অনেকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়ে কর্মসংস্থান খুজেঁ পেয়েছে
  4. ট্রেডিশনাল কোম্পানীগুলো সামাজিক দায়িত্বপালনে (Social Responsibility) সচরাচর জড়িত থাকে কিন্তু নেটওয়ার্ক বা এমএলএম কোম্পানীগুলো সামাজিক দায়িত্বপালন অত্যাবশ্যক কারণ ক্রেতাসন্তুষ্টিই এমএলএম ব্যবসা মূল লক্ষ্য
  5. এমএলএম কোম্পানীগুলো সরাসরি পণ্য উৎপাদন ওবাজারজাতকরণে জড়িত যার দরুন ব্যবস্থাপনা ও ক্রেতা-পরিবেশকদের মধ্যে বিভিন্ন মতামত ও অভিযোগসমূহ নিষ্পত্তি হয়ে থাকে

নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতিগত দুর্বলতা ও বর্তমান প্রেক্ষাপট

নেটওয়ার্ক মার্কেটিং 

পদ্ধতিগত দুর্বলতা ও বর্তমান প্রেক্ষাপট  


মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এম এল এম) বা ডিরেক্ট সেলস ব্যাবসা বেশ জাঁকিয়ে বসেছে আমাদের দেশে। আর এদের প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে দেশের লক্ষ্ লক্ষ মানুষ। অত্যন্ত লোভনীয়, অকল্পনীয়, অফার আর অল্পদিনে কোটি পতি হবার স্বপ্ন নিয়ে ঝুঁকছে দেশের হাজার হাজার বেকার যুবক। শুধু বেকার যুবকই নয়, অনেক শিক্ষিত কর্ম জীবী লোকজন ও ছুটছে এই ব্যবসার দিকে। আলাদীন এর যাদুর প্রদীপ এর মত রাতা রাতি কোটিপতি হতে কে না চায়! কিন্তু আমাদের দেশের এম এল এম ব্যাবসা যেই ভাবে এগুচ্ছে তাতে করে এর ভয়াবহতা আমরা ইতি মধ্যেই টের পেয়েছি।
প্রতিটি আবিষ্কারের ভাল-মন্দ দুটি দিক রয়েছে তবে তা নির্ভর করে মানুষের ওপর। তেমনি বিভিন্ন পদ্ধতি, কৌশল কিংবা গবেষনালব্ধ বিষয়বস্তুর ইতিবাচক ব্যবহার সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পূর্বশর্ত। আমরা সাধারণত উন্নত বিশ্ব হতে অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে পিছিয়ে আছি এর অন্যতম কারণ নতুন প্রযুক্তি ও পদ্ধতি ব্যবহারে অনীহা ও অজ্ঞতা। আর আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি আধুনিক প্রযুক্তিরঅপব্যবহারের  দরুন।
এবার মূল কথায় আসি, নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতি সমগ্র বিশ্বে একটা ভালো অবস্থান তৈরী করতে সক্ষম হলেও বাংলাদেশে এর অবস্থান বিপরীত কেন? এর মূল কারণ গুলো হচ্ছে প্রধানত নিম্নরূপঃ

১। ৬/৮ মাসে বিনিয়োগ ক্রিত অর্থের দিগুন দেওয়ার প্রতিস্রুতি প্রদান করা, যা যে কোন কম্পানির জন্য অত্তান্ত কষ্টসাধ্য ব্যাপার।

২। ম্যাচিং এবং ডিরেক্ট সেলস কমিশন১০% বা তার আধিক প্রদান করা, যার মাধ্যমে কম্পানির দক্ষ নেটওয়ার্কাররা বিনিয়োগ ক্রিত টাকার আনেকটাই দক্ষ নেটওয়ার্কিং এর মাধ্যমে তুলে নিতে সক্ষম হয়।
৩।  এখানে সুযোগ সন্ধানী, জোচ্চোর মানুষ অসংখ্য, যারা আনবরত কিছু নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ নিয়ে গেম্বলিং করে যাচ্ছে।
 
অতীতের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় প্রতিষ্ঠান গুলো আগে থেকে কোন প্রজেক্ট না করে শুধু মাত্র একটি নাম মাত্র সফটওয়্যারের মাধ্যমে ব্যবসায় শুরু করে দেয়। এর ফলে প্রতিষ্ঠানের প্রথম বিনিয়োগ গুলো কোন উৎপাদন মূলক খাতে বিনিয়োগের পরিবর্তে, কম্পানির পরিচালন খাতে ব্যয় হয়ে যায়। এই কারনেই কম্পানি গুলোকে সঠিক সময়ে বিনিয়োগকারীদের প্রাপ্ত কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে সমস্যা হয়েছে।
সারা বিশ্বে জনপ্রিয়তা পা্ওয়া একটি বিপণন পদ্ধতি বাংলাদেশে এসে প্রতারণা ফাঁদ হিসেবে আখ্যা পেল। ধিক্কার দিই তাদের যাদের কারণে আজ এমএলএম শিল্প প্রশ্নের সম্মুখীন, অভিশপ্ত তারা, অভিশপ্ত তাদের অনুসারীরা। লক্ষ লক্ষ নিরীহ মানুষ বাংলাদেশের এমএলএম নাম ভাঙ্গানো প্রতারক ব্যবসায়িদের কবলে পড়ে এখন বিপর্যস্ত।

বস্তুতপক্ষে কারো সাহায্যই প্রয়োজন নেই যদি বিবেকবান মানুষগুলো একত্রিত হয়, যারা নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এর সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে অবগত আছেন তারা সোচ্চার হয়। আমরা শুধু ভুল আর ভুল করেই যাচ্ছি, আর এ ভুলের মাশুল দিতে হচ্ছে লক্ষ লক্ষ গ্রাহক/ক্রেতাদের। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতিটিকে জটিল করে না তোলে খুব সহজে ভাবুন এর চেয়ে চমৎকার বিপণন পদ্ধতি দ্বিতীয় কোনটি হতে পারেনা। বর্তমান সময় হচ্ছে নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এর হাই টাইম সুতারাং ভুল পথে পাঁ না বাড়িয়ে সঠিক পথ বেছে নিতে হবে।

ইতিপূর্বে বিভিন্ন মাল্টি লেভেল মার্কেটিং বা (এম এল এম) কোম্পানির ব্যবসায় পরিচালনায় পদ্ধতিগত দুর্বলতা ও ব্যবসায় আসফল হওয়ার কারনগুলো বিবেচনা করে বর্তমানে কিচ্ছু কোম্পানি নতুন ভাবে এই ব্যবসায়কে গড়ে তুলার চেষ্টা করছে। আমাদের সকলেরই উচিৎ দেশ ও জাতির কল্লানে এই ব্যবসায়কে ব্যবহার করা। এক্ষেত্রে বর্তমানে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে এমন কোম্পানি গুলোকে আমাদের সকলের সহায়তা করা উচিৎ।

Monday, July 29, 2013

জানার কোনো বয়স নেই

আমাদের দেশে এখন ভিক্ষুক আর ব্লগার এর সংখ্যা প্রায় সমান .......
keyboard দিয়ে দুই চারটা ওয়ার্ড লিখতে পারলেই ব্লগার হওয়া যায়না . 
ইদানীং আমি দেখছি ... কিছু লোক কিছু কিছু বিষয়ে না জেনেই উল্টা পাল্টা পোস্ট করে যাচ্ছে .... তারমধ্যে network marketing এর অন্যতম ...
আরে ভাই নেটওয়ার্ক মার্কেটিং একটা বিশ্বজুরে স্বীকৃত একটি পদ্ধতি , এবং এই সাবজেক্ট এর ওপর অনার্স মাস্টার্স কোর্স আছে ... আপনাদের মনে সন্দেহ থাকলে খুজ খবর নিয়ে দেখতে পারেন ..
আমার কথা হলো যে বিষয়ে ওপর অনার্স মাস্টার্সে পড়াশুনা আছে সেই বিষয়ে আপনারা কেন আজে বাজে পোস্ট লিখেন ??
আপনার যদি ভালো না লাগে এই সিস্টেম আপনি কাজ করার দরকার নাই ....
ডাক্তার সবাই হয় না... 
না হয় সবাই ইঞ্জিনিয়ার ....
যার যার বেক্তিগত বেপার ....
why you talk about another person ??

আমি একটা example দেই  ...
আমরা উকিল পেশ্জিবিদের ভালো করে সবাই চিনি তাই না ....
আচ্ছা একজন raper কিংবা killer যদি কোনো উকিল এর নিকট যায় তার বা আসামির পক্ষে উকালতি করার জন্য ...  উকিল কি তার মক্কেলকে  ফিরিয়ে দেয় ?
কখনোই না ... ওই উকিল সে যতো রকমের চেষ্টা আছে সব করে সে তার মক্কেলকে নির্দোষ প্রমান করে আসামিকে বের করে আনে .... প্রকাস্য দিবালোকে .... কই আমিতো আজ পর্যন্ত কোনো উকিল এর বিরদ্ধে কথা বলতে দেখি নাই কাওকে ? 
আরে ভাই network marketing করে বেকার কিছু পোলাপাইন আপনারা কেনো তাদের পেটে লাথি দেন ?
তারাতো মানুষের কাছে মাত্র ৫-৭ হাজার টাকার পণ্য বিক্রয় করছে .... তারাতো একটা পদ্মা সেতুর টাকা হাতিয়ে নেয় না ...
না করে আদম পাচার ....
১০-১৫ লক্ষ টাকা দিয়ে ইতালি আমেরিকা নিয়ে যাবার কথা বলে না ......
সবাইকে আমার অনুরুধ  কোনো বিষয়ের উপর না জেনে মন্ত্বব্য করবেন না ....
কারণ জানার কোনো বয়স নেই  .
ধন্যবাদ  
Kazi ashraful Islam 
International networker

বিশ্বের সবচেয়ে ধনবান ব্যক্তি নেটওয়ার্ক খোঁজে এবং গড়ে তোলে, বাকিরা শুধুই কাজ খোঁজে।”


আমেরিকার বিখ্যাত ধনকুব রবার্ট টি কিয়োসাকি বলেন, “ আমার ধনবান বাবা বলতেন,‘ বিশ্বের সবচেয়ে ধনবান ব্যক্তি নেটওয়ার্ক খোঁজে এবং গড়ে তোলে, বাকিরা শুধুই কাজ খোঁজে।”



কথাটা এই একবিংশ শতাব্দীতে এসে পুরোপুরি সত্য প্রমানিত হয়েছে। আমাদের স্কুল কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় গুলো শেখায় আমরা কিভাবে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে অন্যের চাকুরী করে টাকা রোজগার করতে হয়। কিন্তু টাকা কিভাবে আমাদের জন্য কঠোর পরিশ্রম করে তা আমাদের শেখায় না। এম এল এম এ দেখা যায় টাকাই আপনার জন্য খাটে।





এম এল এম বা নেটওয়ার্ক মার্কেটিং সম্পর্কে তিনি আরো বলেন,“ ধনী হয়ে ওঠা এমন সহজ আগে কখনই ছিল না। একটি সফল ব্যবসা গড়ে তুলতে যে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার প্রয়োজন তা আয়ত্ত করতে আমার ৩০ বছরেরও বেশি সময় লেগেছে, ব্যবসায় দুবার অসফলতার সম্মুখীন হতে হয়েছে। যারা নিজের আর্থিক ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রণে আনতে চায় তাদের সকলের জন্য নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ইন্ডাস্ট্রি প্রস্তত করেছে এক রেডিমেড ব্যবসা পদ্ধতি”



পাঁচটি বেস্ট সেলার বই এর লেখক এ্যালান পীজ্ বলেন,“ ১৯৮০ সালে যখন আমি প্রথমবার মার্কেটিং নেটওয়ার্ক এর সাথে পরিচিত হলাম, আমি স্তম্ভিত হয়ে গেছিলাম এই ভেবে যে এখানে কত অভাবনীয় সুযোগ থাকতে পারে যেটা সহজ, নৈতিক , আইনগত এবং মজার ফলদায়িক। আর এটা কোন চটপট বড় লোক হওয়ার কোন যোজনা নয় , বড়লোক হবার একটা পদ্ধতি। 



মাল্টি লেভেল মার্কেটিং ( এম এল এম) বা নেটওয়ার্ক মার্কেটিং কি?



প্রচলিত পদ্ধতিতে কোন পন্য কম্পানি থেকে উৎপাদিত হয়ে এজেন্ট, পাইকার বিক্রেতা, খুচরা বিক্রেতা এর হাত ঘুরে আমাদের ভোক্তা পযার্য়ে পৌঁছায। এই ক্ষেত্রে ভোক্তা শুধু পন্যটি ভোগ বা ব্যবহারই করতে পারে। এর বেশি কিছু পায় না। আবার আমরা যারা কোন ব্র্যান্ডের পন্য ব্যবহার করে ভাল হলে অন্য বন্ধুকে বলি যে অমুক জিনিষটা ভাল। এই ক্ষেত্রে আমরা কিন্তু সেই ব্র্যান্ডের মার্কেটিংটা করে দিচ্ছে কিন্তু এর বিনিময়ে সেই কোম্পানি আামাদের কে কিছুই দিচ্ছে না।



যেই ব্যবসা পদ্ধতিতে কোন কোম্পানির উৎপাদিত পন্য এজন্ট, পাইকার বিক্রেতা ও খুচরা বিত্রেতার মাধ্যেমে না এসে সরাসরি ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছায় এবং যেই ব্যক্তির মারফত সেটা পৌছায় বা যার রেফারেন্সে কোন ব্যক্তি পন্য ক্রয় করে কমিশন লাভ করে একটা স্থায়ী আয়ের পথের সূচনা করে তাকে মাল্টি লেভেল মার্কেটিং বা নেটওয়ার্ক মার্কেটিং বলে।



মাল্টিলেভেল মার্কেটিং বা বহুমাত্রিক বিপণন পদ্ধতি আধুনিক বিপণন পদ্ধতির মধ্যে একমাত্র পদ্ধতি যে পদ্ধতিতে ক্রেতা বাা ভোক্তাদের বিভিন্ন স্তরে অথবা নিয়মিত কমিশন প্রদান করা হয়।

এই পদ্ধতি তে কোন ক্রেতা পরিবেশক ( ডিস্ট্রিবিউটর) নূনতম দুইজন নতুন ডিস্ট্রিবিউটর সৃষ্টির মাধ্যমে আজীবনের জন্য একটা স্থায়ী আয়ের পথের সূচনা করতে পারেন। তিনি নতুন যে দুজন ডিস্ট্রিবিউটর সৃষ্টি করবেন তারা সারা জীবন যে আয় করবেন সেই আয়ের কমিশন প্রথম ডিস্ট্রিবিউটর সারাজীবন এমন কি তার মৃত্যুর পর তার উত্তরাধীকারী ভোগ করতে পারবেন। 



এম এল এম কারা করতে পারবেন?

সহজ কথায় যে সুস্থ মস্তিষ্কের ব্যক্তি বাংলাদেশের ভোটার

লেখকঃ মজিদ বিশাস

Friday, July 26, 2013

এমএলএম এর এখন দুটি পক্ষঃ বুঝার দল আর না বুঝার দল



‘দাদার হাতে কলম ছিল ছুড়েঁ মেরেছে, উহ্ বড্ড লেগেছে’ এই লাইনটি এখন আমার তিন বছরের ছেলের মুখেও মাঝে মাঝে শুনি। আমার সম্মানিত সাংবাদিক দাদাদের কলমের গুতা খেতে খেতে নেটওয়ার্কারদের মুখে মুখে এখন ‘দাদার(সাংবাদিক)হাতে কলম ছিল লিখে দিয়েছে, উহ্ বড্ড ক্ষেপেছে’। দীর্ঘ দিনপর আবার আজ লিখতে মনে হলো দাদাদের লেখা পড়ে(গতকালের), যেটুকু মনের ভেতর আছে তা পুরো লিখলে হয়তো প্রশান্তি লাভ করতাম কিন্তু তা ভেতর থেকে বের হয়ে আসে না। ভাল আর মন্দের তফাৎ যে জানেনা তার লেখার অধিকার নেই, যে মন্দকে ভাল হওয়ার সুযোগ দেয়না তার বলার অধিকার নেই। এদেশে এমএলএম বন্ধের আইন হচ্ছে না, হচ্ছে এমএলএম এর নাম দিয়ে জুয়াবাজি আর প্রতারণা বন্ধের আইন। অল্প দুঃখে মানুষ কাঁদে আর অতি দুঃখে মানুষ কাঁদতে পারেনা মনে হয় বুকটা চিঁড়ে প্রানটা বেরিয়ে যাবে।যারা এমএলএমকে ভালবাসে তাদের কান্না ভেতরেই থেকে যাচ্ছে আর যারা দু’নম্বর এমএলএম করে তারা গুনগুন করে কাঁদে কারণ তারা কামাইতে পারতো ১ কোটি কিন্তু কামাইছে ১০লাখ।

ঝড়ের মতো তছনছ করে দিল আমার সব স্বপ্ন, এগার বছর ধরে লড়ছি এ এমএলএম এর জন্য। কখনো বুঝিয়ে কখনো শিখিয়ে কখনোবা লিখে। আমি দেখেছি সামান্য ক’টা টাকা কমিশন হিসেবে পেয়ে যেমন লাফ দিয়ে জড়িয়ে ধরে তা ভুলার নয়। আপনাকে উপলব্দি করতে হবে তাদের আনন্দ আর উল্লাস আর তাদের বেদনা। আমরা ভালকে যেমন উপলব্দি করতে চাইনা তেমনি খারাপকে ভালো হওয়ার সুযোগ দিইনা। এমএলএম মানে আরেকজনের গাছের কাঁঠাল চুরি করে এনে দলবদ্ধভাবে খাওয়া নয়, এমএলএম মানে নিজের কাঁঠাল সবাইকে নিয়ে খাওয়া, যেখানে খাওয়ার জন্যও ট্রেনিং নিতে হয়। যারা ইউনিপে, স্পীক এশিয়া, রেভনেক্স, ডুলেন্সার ও ডেসটিনিসহ আরো বেশ কিছু কোম্পানী করেছে তারা পুরো কাঁঠাল গাছটাকেই তুলে এনেছে যে গাছে আর কখনো ফল আসবে না। আমি এমএলএমকে দু’দলে ভাগ করেছিঃ বুঝার আর না বুঝার দল।

ক. বুঝার দলে যারা আছেন- ১. যারা এমএলএমকে ভালবাসেন

                                           ২. যারা এমএলএম এর ভাল ও খারাপ যাচাই করতে পারেন

                                           ৩. যারা এখনো ভাল কোন এমএলএম প্রতিষ্ঠানের অপেক্ষমান

                                           ৪. যারা এখনো কিছুই শুনেনি, কিছুই জানে না।

খ. না বুঝার দলে আছেন-  ১. যারা এমএলএমকে ভালবাসে (শুধু টাকার জন্য)

                   ২. যারা ভাল ও খারাপ যাচাই করে না

                   ৩. যারা অনেকগুলো এমএলএম ফার্মের সদস্য

                   ৪. যারা না বুঝে পত্রিকায় লিখে

আমি আবারো দুঃখ প্রকাশ করছি, সমবেদনা প্রকাশ করছি তাদের জন্য যারা এমএলএম এর নাম দিয়ে ভূয়া কিছু প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করে লক্ষ লক্ষ টাকা হারিয়েছে। আমরা জানি একজন মানুষ কখনো আরেক মানুষের ক্ষতির কারণ হতে পারে না একমাত্র মানুষরুপী শয়তানই তা পারে।

আমি আবারো সেইসব লিডার ও নেটওয়ার্কারদের দোষারোপ করবো যারা জেনেও না জানার ভান করছে বুঝেও না বুঝার ভান করছে। যেখানে মানুষের সামান্যতম ক্ষতির সম্ভাবনা আছে সেপথে না গেলেই কি নয়। অর্থের জন্য দশজনের ভাগের কাঁঠাল একজনের হাতে তুলে দিলেই কি লিডারের দায়িত্ব পালন হয়ে যায়। মনে রাখবেন এসব ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের দ্বায়ভার কখনো রাষ্ট্র নিবে না কারন এটা শেয়ার বাজার নয় যেখানে রাষ্ট্রের দায়িত্ব থেকে যায়। দু’নম্বর এমএলএম ব্যবসায় বাবার প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা এনে নামতা পড়তে পড়তে কোটিপতি হয়ে যাবার জের বাবার মৃত্যু। আসুন আমরা আরো ভাল বুঝে নিই, ভুল পথ থেকে মানুষকে দূরে রাখি, নিজের যা কিছু আছে তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকি, পরের কল্যাণ কামনা করি, মানুষের মিষ্টি কথায় কান না দিয়ে আগে যাচাই করি, লোভ আর সুদ থেকে দূরে থাকি। আমীন।

এম. রহমান আরিফ

(বিঃদ্রঃ আমার জন্য দোয়া করবেন যাতে আরো আবোল তাবোল লিখতে পারি।)

মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম)ব্যবসায় আপনাকে স্বাগতম

এদেশের মানুষ অর্থাৎ আমরা কতটা সরল ও আবেগপ্রবণ তা অনুধাবন করার অন্যতম স্থান নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসা। কিছু মানুষ আবেগের বশে আর কিছু মানুষ লোভের বশবতি হয়ে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং পদ্ধতির দোহাই দিয়ে প্রতারণার অন্যতম ক্ষেত্র তৈরী করেছে পুরো বিষয়টিকে। ভাল-মন্দ বিবেচনা করার সামর্থ আপনার যতই থাকুক না কেন একটি অজানা বিষয় বুঝার বা এ নিয়ে মন্তব্য করার মতো পরিপক্কতা আপনার নাও থাকতে পারে।  দারিদ্রতার হাত থেকে মুক্তির উপায় খুঁজতে সাধারন মানুষ ছুটে যায় অনিশ্চিত শেয়ার বাজারে কিংবা প্রতারণার নতুন ক্ষেত্র এমএলএম (বিনিয়োগ) ব্যবসায়। দারিদ্রতার কষাঘাতে জর্জরিত এ জাতির ভাগ্য ফেরানোর হাতিয়ার কখনোই এমএলএম বা নেটওয়ার্ক মার্কেটিং হতে পারেনা যদিনা এর প্রয়োগ ও নিয়ন্ত্রণ রাষ্ট্রের অধীনে থাকে। তেতুঁলিয়া থেকে টেকনাফ পর্যন্ত এমন কোন গৃহ মনে হয় বাদ যায়নি যেখানে আমাদের এ অপরিপক্ক নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এর ছায়া পড়েনি কিন্তু এর ইতিবাচক থেকে নেতিবাচক প্রভাবই অনেক বেশি। এমএলএম মানেই ধোঁকাবাজী, প্রতারণা, মানুষ ঢুকানোর ব্যবসা ইত্যাদি শুনতে শুনতে আমাদের মতো অতি সাধারন মানুষগুলো যারা একটা সঠিক এমএলএম পরিবেশ গড়ার প্রত্যাশায় ছিলাম তারা রীতিমত হতাশাগ্রস্থ এবং যারা ভূয়া এমএলএম বিনিয়োগ করেছে তারা সর্বশান্ত। ১৯৯৯/২০০০ সাল থেকে ২০১২ সময়টুকু যেন মাল্টিলেভেল মার্কেটিং বা নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এর জন্য সবচেয়ে লজ্জাজনক সময়কাল। এখনো আমরা দূরে সরে যাইনি, অপেক্ষায় আছি একটি ভাল এমএলএম আইনের একটি চমৎকার এমএলএম শিল্পের জন্য। আপনাকে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং ব্যবসায় স্বাগতম এজন্য যে এ শিল্পের প্রসারে সচেতন মানুষের আগমন খুবই প্রয়োজন। কতিপয় ছদ্মবেশী লোক খুব কৌশলে এ ব্যবসার আপাদমস্তক সর্বনাশ করে নিজেদের আখের গোছিয়েছে। ঐ লোকগুলোই বাংলাদেশে এমএলএম আইনের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সঠিক এমএলএম ব্যবসায় আগ্রহীদের স্বাগতম, যারা পরের কল্যাণকামী, যারা সত্যকে আকঁড়ে ধরতে পছন্দ করে তাদের এ ব্যবসায় স্বাগতম।


এমএলএম সফটওয়্যার তৈরীতে লক্ষ্যনীয়


সারাবিশ্বে এখন মাল্টিলেভেল মার্কেটিং বা নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এর জোয়ার বইছে। দেরীতে হলেও এর ছোঁয়া এদেশেও এসে পড়েছে । বরাবরের মতোই এক্ষেত্রেও অপরকে অনুসরণ করার প্রবণতা রয়েছে। অন্যদের বিজনেস প্লান, কমিশন প্লান নকল করে অর্থশালী হওয়ার প্রচেষ্টা অনেকেই করেছে ও করছে। কিন্তু আমার অভিজ্ঞতা আর অধ্যয়ন হতে যা বুঝি তাহলো কখনই এমএলএম ব্যবসা নকল বা কপি করা যাবে না। এমএলএম সফটওয়্যার তৈরীর সময় কিছু বিষয়ের প্রতি নজর রাখতে হবে, যেমনঃ ১) সময়োপযুগী কমিশন প্লান  ২) দ্রুত কমিশন ও বোনাস ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম  ৩) অনলাইন ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সফটওয়্যার সিকিউরিটি। ৪) প্রোডাক্ট কম্পিটিবল সফটওয়্যার ইত্যাদি।

একটি এমএলএম কোম্পানীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে পণ্য, কমিশন প্লান, ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি সুপরিকল্পিত সফট্ওয়্যার অত্যাবশ্যক। সফটওয়্যার দ্বারা শুধুমাত্র যে কমিশন ও বোনাস এর হিসাব-নিকাশ হয় তা নয় বরং পণ্য, ডিস্ট্রিবিউটর ম্যানেজমেন্ট, যোগাযোগসহ যাবতীয় অনেক কাজই সম্ভব। একটি এমএলএম সফটওয়্যার তৈরীর সময় ভবিষ্যৎ প্রতিযোগীতা ও সময়োপযুগী পরিবর্তনের বিষয়টি বিবেচনা রেখে কাজ করতে হবে, শুধু সস্তা জিনিস খুঁজে কোন সফলতা পাওয়া যাবে না। অনলাইন ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজস্ব সার্ভার ব্যবহারের চেষ্টা করতে হবে। আর বরাবরের মতোই একটি কথা বলবো তাহলো সঠিক ও মান সম্পন্ন পণ্য ব্যতীত শুধু টাকা নির্ভর এমএলএম কোম্পানীর চিন্তা করা অনুচিত।

পরামর্শে- +60196536002

বইঃ মাল্টিলেভেল মার্কেটিং নীতিমালা ও প্রাসঙ্গিক কিছু কথা

সূচীপত্র

 

অধ্যায় একঃ  মাল্টিলেভেল মার্কেটিং এর জন্ম সাধারণ মানুষের কল্যাণে
অধ্যায় দুইঃ  মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কোম্পানীগুলোর বিরুদ্ধে এত অভিযোগ কেন?
অধ্যায় তিনঃ মাল্টিলেভেল মার্কেটিং পদ্ধতির বিকাশে পত্র-পত্রিকার ভূমিকা
অধ্যায় চারঃ মাল্টিলেভেল মার্কেটিং নীতিমালা করতে হবে সাধারণ মানুষের কল্যাণে
অধ্যায় পাঁচঃ মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কোম্পানীগুলো যেভাবে পরিকল্পনা করা উচিত
অধ্যায় ছয়ঃ মাল্টিলেভেল মার্কেটিংকে কর্মসংস্থানের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে গড়ে তোলতে হবে
অধ্যায় সাতঃ সাফল্যের জন্য ডাউনলাইনে সঠিক তথ্য ও সৎ পরামর্শ দিন
অধ্যায় আটঃ ইতিবাচক মনোভাব সাফল্যের পথ তৈরী করে
অধ্যায় নয়ঃ বাইনারী ম্যাজিক ও পদ্ধতি বিশ্লেষণ
অধ্যায় দশঃ  ‘ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণ আইন’ কি এমএলএম আইন তৈরীতে সহায়ক হবে ?
অধ্যায় এগারঃ সাফল্যের জন্য চাই অধ্যবসায়, কর্মপরিকল্পনা ও কঠোর পরিশ্রম
অধ্যায় বারঃ মাল্টিলেভেল মার্কের্টিং পদ্ধতিতে হারবাল পণ্যের সম্ভাবনা
অধ্যায় তেরঃ আপনার পছন্দের তালিকায় দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রাধান্য দিন

অধ্যায় এক

মাল্টিলেভেল মার্কেটিং এর জন্ম সাধারণমানুষের কল্যাণে

মার্কেটিং বা বিপণনের একটি নতুন ও অনন্য আবিষ্কার মাল্টিলেভেল মার্কেটিং। আমেরিকার বিখ্যাত কেমিস্ট ডঃ কাল রেইন বোর্গ তার উৎপাদিত কৃত্রিম ভিটামিন (যা আয়োডিন ও ভিটামিন ‘ই’ এর  সংমিশ্রনে তৈরী) বাজারজাত করনের জন্য সর্বপ্রথম বহুমাত্রিক পদ্ধতি এর ধারনা প্রবর্তন করেন। পাশাপাশি ‘ক্যালিফোনিয়া ভিটামিন, নামে একটি কোম্পানী প্রতিষ্ঠা করেন যা বিশ্বের প্রথম নেটওয়ার্ক মার্কেটিং কোম্পানী বলে স্বীকৃতি পায়। কারন ১৯৪০ সালের শুরুতে এটিই একমাত্র প্রতিষ্ঠান যার বিক্রয় কার্যক্রম ছিল বহুস্তরে বিভক্ত, যে ধারনা হতে জন্ম নেয় বহুমাত্রিক বিপণন পদ্ধতি বা মাল্টিলেভেল মার্কেটিং পদ্ধতি। আমরা বিপণন বা মার্কেটিং এর বিভিন্ন ধরণ বা কৌশল দেখে থাকি বিশেষ কয়েকটি ধরণ হলোঃ ()সরাসরি বিপণন পদ্ধতি (Direct Selling)() ট্রেডিশনাল পদ্ধতি (Traditional System) () টেলি মার্কেটিং (Tele Marketing) () ইন্টারনেট মার্কেটিং (Internet Marketing) ইত্যাদি। যে কোন বিপণন পদ্ধতির চেয়ে এমএলএম পদ্ধতির বেশ কিছু পার্থক্য লক্ষ্যণীয় তম্মধ্যে অসংখ্য মানুষের অংশগ্রহণের বিষয়টি অন্যতম অর্থাৎ যেখানে ক্রেতাই পরিবেশক বা কোম্পানীর প্রতিনিধি হিসেবে কাজের সুযোগ পায়। মধ্যস্বত্বভোগীদের সংখ্যা কমিয়ে বা এড়িয়ে কোম্পানী কর্তৃক লাভের অংশ কিংবা মার্কেটিং খরচ সাশ্রয় করে সাধারণ ক্রেতা বা পরিবেশকদের মাঝে বন্টন করা হয়, ক্রেতা বা পরিবেশকগণ টীম বা দল গঠন করে নিজেদের বিক্রয় বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়। এভাবে অসংখ্য মানুষ পার্ট টাইম বা ফুল টাইম আয়ের পথ হিসেবে এ পদ্ধতিকে বেছে নেয়ার সুযোগ পায়। সংক্ষেপে আমরা দেখব কেন এমএলএম ব্যবসাকে জনকল্যাণকর বলা হয়ে থাকেঃ

  1. এমএলএম ব্যবসায় সরাসরি ক্রেতাগণ জড়িত থাকে বিধায় ক্রেতারা নিজেদের পছন্দসই পণ্য বেছে নেয়ার সুযোগ পায়।
  2. এমএলএম ব্যবসায় পণ্য বিক্রয়ের উপর কমিশন অর্জন করা যায় বিধায় অসংখ্য মানুষ এ ব্যবসা হতে আয়ের সুযোগ পায়।
  3. টীম বা দল গঠন করে দীর্ঘমেয়াদী ও রয়েলটি আয়ের সুযোগ থাকে বিধায় মাল্টিলেভেল বা নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতিকে অনেকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়ে কর্মসংস্থান খুজেঁ পেয়েছে।
  4. ট্রেডিশনাল কোম্পানীগুলো সামাজিক দায়িত্বপালনে (Social Responsibility) সচরাচর জড়িত থাকে কিন্তু নেটওয়ার্ক বা এমএলএম কোম্পানীগুলো সামাজিক দায়িত্বপালন অত্যাবশ্যক কারণ ক্রেতা সন্তুষ্টিই এমএলএম ব্যবসা মূল লক্ষ্য।
  5. এমএলএম কোম্পানীগুলো সরাসরি পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে জড়িত যার দরুন ব্যবস্থাপনা ও ক্রেতা-পরিবেশকদের মধ্যে বিভিন্ন মতামত ও অভিযোগসমূহ নিষ্পত্তি হয়ে থাকে।

 

অধ্যায় দুই

মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কোম্পানীগুলোরবিরুদ্ধে এত অভিযোগ কেন?

ঊনিশশত পঞ্চাশের দিকে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়লেও আমরা এর স্বাদ পেয়েছি ঊনিশশত নিরানব্বই এর দিকে। যারা তখন এদেশে ঐসব নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এর সাথে জড়িত ছিলেন তারা নিশ্চয়ই এখন অনুধাবন করতে পারছেন তা ছিল এক ধরনের পিরামিড স্কীম। সেখান থেকেই শুরু এরপর অনেকেই রাতারাতি ধনী হওয়ার অন্যতম কৌশল হিসেবে বেছে নিয়েছেন ঐসব কৌশল। কাউকে দোষারোপ করতে পারছিনা কারণ আমরা জাতি হিসেবে খুবই দূর্ভাগা, কল্যাণকর বিষয়গুলো আমাদের কাছে অকল্যাণ হিসেবেই ধরা দেয়। যে মানুষগুলো নিয়মিত নিজেদের মৌলিক চাহিদা পূরণে হিমশিম খায় তাদের কাছে দ্রুত ধনী হওয়ার হাতিয়ার তুলে দেয় এমএলএম নামধারী প্রতিষ্ঠানগুলো। ‘সিস্টেম’ এর কথা বলে মানুষকে সুক্ষভাবে নিঃশেষ করে দেয় এসব প্রতিষ্ঠান। এখনো দেশের আনাচে কাঁনাচে অনেক কোম্পানী আছে যারা দু’চারটি কম্পিউটার, সফ্টওয়্যার আর পাইকারী বাজারের কিছু পণ্য কিনে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং ব্যবসা বলে চালিয়ে দিচ্ছে। এদেশের সরল সাধারণ লোকগুলো যখন ৫০০/১০০০ টাকা নগদ হাতে পায় তখন হন্যে হয়ে নতুন গ্রাহকের পেছনে ছুটে বেড়ায়। মনে আছে নিশ্চয়ই আমরা অনেকেই ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকার পানির ফিল্টার ৫০০০ কিংবা আরো চড়া মূল্যে কিনেছি কারণ আমরা এমএলএম ব্যবসার কমিশন পেতে আগ্রহী ছিলাম। আমি তখন একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, ‘আপনি ১০ টাকার পণ্য ২০ টাকা অর্থাৎ দ্বিগুণ মূল্য নিচ্ছেন এতে ক্রেতারা ক্ষুদ্ধ হয়না’ তিনি জবাবে বলেছিলেন ‘কমিশন দিতে হবে এটা তারাও জানে তাই উচ্চমূল্যেও পণ্য কিনছে’। তখন বুঝেছিলাম আমরা শুধু কমিশন পাওয়ার জন্য সচেতন, অন্য দশজন ঠকলো কি জিতলো তা আমাদের দেখার প্রয়োজন নেই। অভিযোগের শুরু এখান থেকেই, যারা বুঝতে পারলো এখানে প্রতারণা চলছে তারা সরে গেল আর যারা সুযোগ সন্ধানী তারা অন্যদের উৎসাহ (Motivation) দিয়ে ফায়দা লুটতে লাগলো। আপনি ইচ্ছে করলেই ভালো কিছু শুরু করতে পারবেননা। কারণ এখানে প্রথমে যারা সুবিধাভুগী ছিল তারাই বছরের পর বছর সুবিধাভোগ করছে। মানুষের কল্যাণের কথা যারা ভাবে তারা এখনো সাহস করতে পারেনা এমএলএম শুরুর । দশ বছর পর আমরা যেখানে থাকার কথা সেখান থেকে বস্তুত পিছিয়ে পড়েছি কারণ এমএলএম ব্যবসাকে মন্দ বলতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি। কিভাবে এ সমস্যা থেকে বেড়িয়ে আসা যায় তার প্রচেষ্টা আমাদের ছিলনা। আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদেরই বেশী দায়ী মনে করি যারা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেও প্রতারক প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে কাজ করে যাচ্ছে, নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করার জন্য অন্যদের ব্যবহার করছে। বিগত দশ বছরে যেসব কারণে সাধারন মানুষের মনে ভীতির সঞ্চার হয়েছে তার অন্যতম কারণ কিছু ঠক বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের লোভনীয় অফার এবং অবশেষে পলায়ন যেমনঃ গ্রেট ইন্টারন্যাশনাল। এমন দু’চারটি প্রতিষ্ঠানই যথেষ্ঠ মাল্টিলেভেল মার্কেটিং পদ্ধতির সর্বনাশের জন্য। যারা সঠিক এমএলএম এর কথা বলছে তারা কতটুকু সঠিক তা খতিয়ে দেখার মতো এখনো তেমন কেউ নেই আর এজন্যই প্রত্যেকে নিজেদের সঠিক বলে দাবী করছে।  গড়পড়তা সব প্রতিষ্ঠানকে আমি মন্দ বলতে পারছি না কারণ মন্দের ভালও এখানে আছে। দেশীয় অনেক উৎপাদনমূখী  প্রতিষ্ঠান বর্তমানে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং পদ্ধতি অনুসরণ করে বাজারে নিজেদের ভাল অবস্থান তৈরী করতে সক্ষম হয়েছে এবং এসব প্রতিষ্টানের সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে ট্রেডিশনাল অনেক প্রতিষ্ঠান এমএলএম পদ্ধতিতে আসছে। এসব প্রতিষ্ঠান দীর্ঘ সময় প্রতিনিধিত্ব করতে সক্ষম হবে যদি সঠিক পথ বেছে নেয়। মাল্টিলেভেল মার্কেটিং এর যে অপবাদ বা বদনাম যাই বলি তা রাতারাতি ঘুচানো যাবেনা বরং অভিযোগগুলো যাতে শুধরানো যায় সে প্রচেষ্টা করতে হবে। যেসব অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয় তাহলোঃ

ক)     মাল্টিলেভেল বা নেটওয়ার্ক মার্কেটিং যদিও পণ্য বিক্রয়ের সাথে জড়িত অনেক প্রতিষ্ঠান এখনো পণ্য ব্যতীত অদৃশ্যমান পণ্য নিয়ে (অগ্রীম/বুকিং নিয়ে) ব্যবসা করছে।

খ)      অতিরিক্ত মূল্যে পণ্য বিক্রয় (সাধারনত যেসব পণ্য বাজারেও পাওয়া যায়)।

গ)      অর্থলগ্নী প্রতিষ্ঠান না হলেও অনেক এমএলএম কোম্পানী স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের আর্কষণীয় অফার দিয়ে ব্যবসা করছে।

ঘ)      কমিশন প্রদানের জন্য যেসব কম্পেসেশন প্ল্যান তৈরী করা হয় তার বেশীর ভাগই অস্পষ্ট।

ঙ)      স্বল্পমূল্যে বিদেশ থেকে পণ্য এনে চড়া মূল্যে বিক্রয়।

এধরনের অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে মাল্টিলেভেল বা নেটওয়ার্ক মার্কেটিং কোম্পানীগুলোর ব্যাপারে। যে অভিযোগগুলো আমাদের পক্ষে সমাধান সম্ভব কিছুটা আন্তরিক হলে তবে এজন্য প্রথমে মানুষকে ঠকানোর মানসিকতার পরিবর্তন ঘটাতে হইবে। আপনাদের অনেকেরই মনে আছে প্রথম গ্রামীণ ফোনের মোবাইল প্রিপেইড সীম কিনেছেন দীর্ঘ লাইনে দাড়িঁয়ে সাত থেকে আট হাজার টাকায় আর এখন ১০০ থেকে ১২০ টাকায় সীম পাওয়া যায়। বিষয়টি মাল্টিলেভেল মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে ভাবুন এখন অনেক ক্রেতারা অনেক বেশী সচেতন এবং অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠার দরুন প্রতিযোগিতার বিষয়টি এখন প্রাধান্য পাচ্ছে।

অধ্যায় তিন

মাল্টিলেভেল মার্কেটিং পদ্ধতির বিকাশেপত্র-পত্রিকার ভূমিকা

খবরের কাগজ বা নিউজ পেপার-কে বলা হয় যে কোন জাতির বিবেক। আমরা একটি দিনও পার করতে পারিনা পত্রিকা ছাড়া। কিন্তু পত্রিকা খুললেই বেশীরভাগ নেতিবাচক খবর। এজন্য আমরাই প্রতীক্ষায় থাকি কোন্ দূর্ঘটনা, হিংসা-হানাহানি, হত্যা ইত্যাদি কেন ঘটল বা কিভাবে ঘটল তা জানার জন্য। সুখের খবর, শান্তির খবর বা ইতিবাচক খবর আমরা খুব কমই দেখি-শুনি, এটাও আমাদের নেহায়েত র্দূভাগ্য। যদি এভাবে চিন্তা করি আমাদের সমাজের অসংগতিগুলো তুলে ধরছে পত্রিকাগুলো তবে সেটিই সত্য। কিন্তু এর পাশাপাশি সমস্যা সমাধানের উপায় চিহ্নিত করলে তা অবশ্যই ফলপ্রসু হতো। প্রাসঙ্গিক বিষয়ে বলি যেমনঃ বিগত ৭-৮ বছর আমার চোখে পড়েনি এমএলএম বিষয়ে ইতিবাচক কোন্ খবর কোন্ পত্রিকায়। যে পদ্ধতিটি বিশ্বব্যাপী সমাদৃত সে বিষয়টি আমাদের জন্য কতটুকু কল্যাণকর বা কিভাবে এ পদ্ধতির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা যায় তা কখনও কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে বলে আমার জানা নেই। তবে কি ধরে নেব সারাবিশ্ব একটা মিথ্যে বিষয়ের পেছনে ছুটছে অথবা আমাদের জন্য এ পদ্ধতি অপ্রয়োজনীয়। আমরা যেহেতু একটা স্বাধীন গনতান্ত্রিক দেশের নাগরিক এজন্য আমাদের বলা, চলা এবং লেখা ইত্যাদির মধ্যে স্বাধীনতা রয়েছে কিন্তু এর মানে এই নয় যে আমার ইচ্ছেমত আমি বলব বা লিখব। আমি কোন পত্রিকার সাংবাদিক বা কলামিস্ট হলেই যে কাউকে চোর বা প্রতারক বলতে পারিনা যতক্ষণ না দেশের আইন দ্বারা তা প্রমাণিত হয় (আমার জানা মতে)। আমাদের দেশে এমএলএম আইন নেই বিধায় কিছু প্রতিষ্ঠান এমএলএম এর নামে অসৎ উপায় অবলম্বন করছে তা সবার জানা, এজন্য যে কোন প্রতিষ্ঠানকে প্রতারক বলে পত্রিকায় লেখার স্বাধীনতা মনে হয় দেশের আইনে (Law of Land) নেই। আপনি যদি কারো দ্বারা প্রতারিত হোন তবে অবশ্যই আইনের আশ্রয় নেয়ার অধিকার আছে। এমএলএম কোম্পানী দ্বারা প্রতারিত হয়েছে এমন কয়েকজনকে বাদী বানিয়ে আইনের আশ্রয় নিন, বিচার ব্যবস্থা আপনাকে সঠিক উত্তর দিবে, না হয় প্রয়োজনে আইন তৈরী করবে। আপনি যে প্রতিষ্ঠানকে প্রতারনামূলক প্রতিষ্ঠান বলছেন সে প্রতিষ্ঠানে হয়তোবা ৫/১০ লক্ষ মানুষ পরিবেশক হিসেবে কাজ করছে এর মানে প্রতিষ্ঠানটির সুনাম আছে এবং যা আপনার লেখার কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। আমাদের সম্মানিত মন্ত্রীমহোদয়গণ যখন ঐসব প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে  অতিথি হিসেবে যান নিশ্চিয় তারাও প্রতারণার সাথে জড়িত হয়ে যান কিংবা প্রতারণাকে সমর্থন করেন, কিন্তু আইন দ্বারা প্রমাণিত হলে অবশ্যই মন্ত্রীমহোদয়গণ ঐসব অনুষ্ঠানে যাবেননা অথবা তারা (প্রতারক প্রতিষ্ঠানসমূহ) সম্মানিত ব্যক্তিদের নিমন্ত্রণ করবেন না। দু’একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য পুরো সিস্টেমকে মন্দ বলা যায় না। জেনে লিখুন ধারণা করে লিখবেন না দয়া করে। আমরা বিশ্বাস প্রিন্ট মিডিয়া আমাদের ধ্যান-ধারণার ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটাতে পারে। আমাদের জীবন মানের যে ভয়াবহ দূর্গতি এসব বিষয়ে লেখুন। মৌলিক অধিকার নিয়ে লিখুন, মানুষের সম্মান পাবেন দোয়াও পাবেন। এমএলএম সিস্টেমকে মুখরোচক সংবাদ বানাবেন না। বরং এসব সংবাদ ঐসব প্রতিষ্ঠানের জন্য বিজ্ঞাপন হিসেবে কাজ করে।

 

অধ্যায় চার

মাল্টিলেভেল মার্কেটিং নীতিমালা করতে হবেসাধারণ মানুষের কল্যাণে

আইন মানুষের জন্য, মানুষের কল্যাণের জন্য। সরকার কর্তৃক প্রণীত বিভিন্ন আইন ও নীতিমালা করা হয় সাধারন জনগণের কল্যাণের কথা বিবেচনা করে। যদিও আমরা আইন ও নীতিমালার ব্যাপারে ততটা সচেতন নই তবুও যেসব বিষয়ের আইন নেই সে বিষয়গুলো সাধারণ মানুষের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মাল্টিলেভেল মার্কেটিং পদ্ধতির কোন আইন বা নীতিমালা নেই বিধায় এর সুযোগ নিচ্ছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি। যে যার মতো প্লান তৈরী করছে, যে যার মতো উচ্চমূল্যে পণ্য বিক্রয় করছে, বাজার থেকে বিনিয়োগের নামে টাকা তুলে নিচ্ছে। কোনটি পত্রিকায় লেখা-লেখির আগেই চম্পট দেয় আবার কোনটি পত্রিকায় লেখা-লেখির পর। অনেক প্রতিষ্ঠান নীতিমালা তৈরীর জন্য সরকারের নিকট আর্জি জানিয়ে আসছে দীর্ঘদিন। সর্বদিক বিবেচনা করে সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোন বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিয়ে আইন বা নীতিমালা তৈরী করা হবে। মাল্টিলেভেল বা নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এর মূলভূমিকা পালনকারী এর ক্রেতা বা পরিবেশকগণ, এজন্য ক্রেতা অধিকারকে অগ্রাধিকার দিয়ে নীতিমালা বা আইন প্রণয়ন করতে হবে। তবে শুধূ আইন করলে হবেনা এর বাস্তবায়নের জন্য মনিটরিং সেল গঠন করতে হবে। অদ্যবধি যেসব প্রতিষ্ঠান দেশে এমএলএম পদ্ধতি অনুসরণ করে আসছে সেসব প্রতিষ্ঠানসমূহের মার্কেটিং প্লান, পণ্য মান যাচাই, কমিশন পর্যালোচনা, পরিবেশক সংখ্যা নির্ণয়, আয়কর প্রদানের দলিল পত্রাদি যাচাই বাছাই করে এবং যেসব ক্রেতা বা পরিবেশক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে তাদের ক্ষতিপূরণ প্রদান সাপেক্ষে লাইসেন্স বা অনুমতি প্রদান করতে হবে। তবেই এমএলএম এর প্রতি মানুষের বিশ্বাস বাড়বে। সরকারী নীতিমালার পাশাপাশি মাল্টিলেভেল মার্কেটিং প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের উদ্যোগে সমিতি বা সংস্থা গঠন করে নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসাকে দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে দিয়ে সাধারন মানুষের নাগালে নিয়ে আসতে পারবে এবং বৈধ ও সঠিক পদ্ধতির অনুসরণের ফলে অবৈধ এমএলএম বন্ধ হয়ে যাবে। যুক্তরাষ্ট ও বিশ্বের অন্যান্য দেশের ডিরেক্ট সেলিং কোম্পানী বা নেটওয়ার্ক মার্কেটিং কোম্পানী সমূহকে নিয়ন্ত্রণ করে এমন সংস্থা DSA (Direct Sales Association), যুক্তরাষ্টের প্রায় প্রতিটি এমএলএম বা নেটওয়ার্ক মার্কেটিং কোম্পানী এ সংস্থার সদস্য। এ সংস্থার মেম্বারশীপ পেতে হলে কিছু নিয়মনীতি মেনে চলতে হয় যে নিয়মনীতিসমূহকে Code of Ethics বলা হয়। DSA এর বিশ্বব্যাপী যে সংস্থা কার্যক্রম পরিচালনা করে সেটিকে বলা হয় WDSA বা World Direct Sales Association. নীতিমালা প্রস্তুতের ক্ষেত্রে এসব প্রতিষ্ঠানের নিয়মনীতি ও FTC (Federal Trade Commission) এর বিধিনিষেধগুলো অনুসরণ করা প্রয়োজন বলে মনে করছি। এছাড়া এশিয়ার চীন, মালয়শিয়া ও ভারতের কোম্পানীগুলো জন্য কি কি নিয়ম অনুসৃত হয় তা পর্যালোচনা করে আমাদের বিধিমালা প্রণীত হলে তা সর্বজন গৃহীত হবে।

অধ্যায় পাঁচ

মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কোম্পানীগুলো যেভাবেপরিকল্পনা করা উচিত

আইন বা নীতিমালা যাই হোক না কেন অবশ্যই তা সাধারণের কল্যাণে গঠিত হয়। মাল্টিলেভেল মার্কেটিং পদ্ধতির নীতিমালা বা আইন যতদ্রুত তৈরী হবে তা মানুষ ও প্রতিষ্ঠানের কল্যাণে বয়ে আনবে। কিন্তু তা কখনই এমএলএম কোম্পানীগুলোর স্বার্থের পরিপন্থি হবেনা। যা মানুষের জন্য মঙ্গলজনক তা কখনোই আইনের দ্বারা বিঘ্নিত হয়না। যখন ভাল অবস্থান তৈরী হবে বা প্রতিষ্ঠান যখন আর্থিকভাবে স্বচ্ছলতা লাভ করবে তখন আইন অনুযায়ী কার্যক্রম কার্যক্রম পরিচালনা করবে এমনটি ভাবা অনুচিত। শুরু থেকে প্রতিষ্ঠিত হওয়া পযর্ন্ত একটি প্রতিষ্ঠান যেভাবে এগোনো প্রয়োজন তার একটি বিশেষ পরিকল্পনা/কৌশল তুলে ধরা হলোঃ

ক) যে পণ্যটি আপনি উৎপাদন করছেন বা যে পণ্যটি বাজারজাত করার জন্য একমাত্র আপনিই মনোনীত সে পণ্য/পণ্যগুলো সর্ম্পকে আপনাকে প্রথমে বাজার বিশ্লেষণ করতে হবে। নেটওয়ার্ক ব্যবসায় মানুষ আয় করতে পারবে বিধায় আপনার যে কোন পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করবে এমনটি ভাববেননা। যদি বিশেষ ও আর্কষণীয় নতুন কোন পণ্য হয় তবে অবশ্যই ভাল কিংবা প্রচলিত পণ্যে নতুন কিছু বৈশিষ্ট্য হলেও চলবে। শুধু কমিশন প্লান দিয়ে ক্রেতা/পরিবেশককে আপনি সন্তুষ্ট করতে পারবেননা কারণ নিত্য-নতুন আর্কষণীয় প্লান তৈরী করছে কোম্পানীগুলো। কিন্তু পণ্যের গুণাগুণ ও একক বৈশিষ্ট্যের জন্য আপনি দীর্ঘদিন আপনার অবস্থান সমুন্নত রাখতে পারবেন। যেমনঃ এমওয়ে কর্পোরেশন বিগত ৫১ বছর সমগ্র বিশ্বে শীর্ষস্থানীয় কোম্পানীর স্থান দখল করে আছে কিন্তু তাদের কমিশন প্লান অনেক পুরোনো বা সেকেলে। আমাদের দেশীয় এমএলএম প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আমার জানা মতে মডার্ণ হারবাল কোং গবেষণা ও উন্নত পণ্য প্রস্তুত করে ক্রেতাদের হাতে তুলে দিচ্ছে। আপনি নিত্য প্রয়োজনীয়, ঔষধী, কসমেটিক, ইলেকট্রনিক্স ইত্যাদি  যে পণ্যই বেছে নিবেন পণ্যে আপনার দখল থাকতে হবে।

খ) আপনার পণ্য আছে এজন্য আপনি যে কোন পদ্ধতি বেছে নিতে পারেন . প্রচলিত বিপণনপদ্ধতি . নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতি। যদি আপনি নিশ্চিত হউন যে, আপনি ক্রেতাদের শতভাগ (বা কাছাকাছি) সন্তুষ্ট করতে পারবেন এবং পণ্য নিয়ে বাজারে প্রতিনিধিত্ব করতে পারবেন তবে আপনি নেটওয়ার্ক মার্কেটিং বেছে নিন। সাধারনত যে কোন উৎপাদনকারী উৎপাদনের পর মার্কেটিং বা বাজারজাতকরণের প্রতি বেশী গুরুত্ব দিয়ে থাকেন কারণ বিপণনে ব্যর্থ হলে তার সবই ব্যর্থ। এমএলএম পদ্ধতিতে ক্রেতারাই ভোক্তা এবং পরিবেশকের কাজটুকু করে এজন্য তাদের (ক্রেতা) সন্তুষ্টিই আপনার সাফল্য। কি কি সুবিধা আপনি ক্রেতা বা পরিবেশকদের প্রদান করবেন সেটিই মূখ্য, লেফ্ট – রাইট সাজিয়ে মোটা অংকের কমিশনের প্রলোভন কখনও দীর্ঘস্থায়ী কমিশন প্লানের বৈশিষ্ট্য নয়। বিষয়টি এজন্য বলছি আমাদের দেশের প্রায় আশি ভাগ কোম্পানী বাইনারী প্লান অনুসরণ করে যা উন্নত বিশ্বের বিপরীত। কারণ আমরা আগে প্লান তৈরী করি পরে পণ্য খুজেঁ বেড়াই। পণ্যের উপর নির্ভর করে সহজ সাবলীল ও পরিবর্তনযোগ্য প্লান প্রস্তুত করুন- আপনার সাফল্য নিশ্চিত।

গ) আপনার পণ্যসামগ্রী ও চমৎকার কমিশন প্লান থাকার পর আপনাকে ক্রেতা বা পরিবেশকের  বিভিন্ন সেবাসমূহের প্রতি নজর রাখতে হবে যেমন- বিক্রয়োত্তর সেবা, পণ্যের জন্য কমিশন, টীম গঠনার্থে প্রশিক্ষণ, প্রেষণামূলক প্রশিক্ষণ ইত্যাদি। যে বিষয়টি আমরা চর্চা করিনা তাহলো ক্রেতা/পরিবেশকদের অপিনিয়ন বা মতামত ও তাদের সাজেশন্স বা পরামর্শ; খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ তাদের জন্যই আপনার প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠা। আপনি কিছু লিডারকে সন্তুষ্ট রেখে বিক্রয় সমপ্রসারণ করবেন এমনটি সাময়িক সম্ভব হলেও দীর্ঘমেয়াদে সম্ভব হবেনা। আপনাকে সার্বজনীন চিন্তা করতে হবে অর্থাৎ ক্রেতা, পরিবেশক এবং লিডার প্রত্যেককে নিয়ে ভাবতে হবে। ক্রেতা সন্তুষ্টির বিকল্প নেই কারণ আপনার মূললক্ষ্য পণ্য বিপণন বা বিক্রয় বৃদ্ধি, যতবেশী বিক্রয় বৃদ্ধি পাবে ততবেশী পরিবেশকগণ কমিশন পাবেন এবং ইতিবাচক হবেন। আপনি যতকিছুই করুন না কেন পরিবেশকদের সুবিধা ও সেবাসমূহ প্রদানে ব্যর্থ হলে আপনার লক্ষ্যও ব্যর্থ হবে। শুধূ প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রেষিত করে কাজ আদায় করবেন এমনটি ভাববেননা। প্রশিক্ষণ নেটওয়ার্ক মার্কেটিং প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ  বিষয় কিন্তু এর মানে এটি কোন পণ্য নয়, প্রশিক্ষণের উপর নির্ভরশীল হলে অনেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করবে আপনার প্রতিষ্ঠানে আর কাজ করবে অন্য প্রতিষ্ঠানে। ক্রেতাদের পাশাপাশি আপনাকে লিডারদের প্রতিও লক্ষ্য রাখতে হবে যেমনঃ লিডারদের আয়, বসার স্থান, টীম মিটিং বা আলোচনা করার সুযোগ প্রদান করতে হবে, আপনার নীতিমালা ও নিয়মাবলী এমন হওয়া উচিত হবেনা যেখানে পরিবেশকগণ লিডারদের প্রয়োজনীয়তা উপেক্ষা করতে পারে।

এমএলএম কোম্পানী যিনি গঠন করার সামর্থ্য রাখেন তিনি অবশ্যই ব্যবসা সম্পর্কেও ধারণা রাখেন। আপনি যখনই কোন গঠনমূলক কাজ করতে যাবেন তখন সামাজিক দ্বায়বদ্ধতার কথা স্মরণ রাখলে আপনার সাফল্য আসবেই। আপনি যতবেশী জানুননা কেন প্রতিটি পদক্ষেপ এর পূর্বে আপনার শুভাকাঙ্খিদের সুপরামর্শ নিন, যা আপনার ধারণার বাইরে ছিল তাও জানতে পারবেন এবং সমস্যার সঠিক সমাধান করতে পারবেন। সৎ ও যোগ্য মানুষদের আপনার প্রতিষ্ঠানে স্থান দিন আপনার বিজয় সুনিশ্চিত।

অধ্যায় সাত

সাফল্যের জন্য ডাউনলাইনে সঠিক তথ্য  সৎপরামর্শ দিন

নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসায় লিডার ও সিনিয়র পরিবেশকদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে টীম গঠন, যোগাযোগ, প্রশিক্ষণ ও সেবা প্রদানে লিডারগণ ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। কোম্পানী বিপণন কার্যক্রমকে গতিশীল করার মাধ্যমে লিডাররা মূল কাজকে সহজ করে দেয়। আমাদের দেশে লিডারদের ভূমিকা অন্য দেশীয় কোম্পানীর চেয়ে অনেক বেশী শক্তিশালী। যেমন ধরুন ‘ক’ নামক কোম্পানীর নিজস্ব কোন পণ্য নেই কমিশন প্লানও তেমন আকর্ষণীয় নয় এখন উপায় ‘লিডার’। কারন লিডারদের সাথে কোম্পানীর ব্যবস্থাপনার ‘সুসর্ম্পক’ থাকে এজন্য দেখবেন এসব কোম্পানী থেকে লিডাররা সরে গেলে কোম্পানীগুলো বেলুনের মতো চুপসে যায়। লিডার ও সিনিয়র পরিবেশকদের বর্তমান চিত্র ও করনীয় সর্ম্পকে নিন্মে লিখছি, এ লেখাগুলোকে নেতিবাচকভাবে না নেয়ার অনুরোধ করছি কারণ লিডার ও উদ্যোক্তাদের উপর নির্ভর করছে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের এমএলএম।

লিডাররা যা করেনঃ

ক) ক্রেতা বা পরিবেশকদের কার্যক্রম আরো বেগবান করার জন্য লিডাররা তাদের প্রেরণা দেয় ও বিভিন্নভাবে সহযোগিতা প্রদান করে।

খ) কোম্পানীর তথ্যাদি ক্রেতা বা পরিবেশকদের প্রদান করে তবে সত্য ও মিথ্যেও প্রভেদটুকু বুঝতে দেয়না।

গ) অধিকাংশ লিডার মনে করেন তাদের ছাড়া কোম্পানী অচল এজন্য কোম্পানীর কাছ থেকে যাবতীয় বাড়তি সুবিধাগুলো নিতে চায়। অন্যদিকে পরিবেশকরা মনে করে লিডাররা তাদের পক্ষে কোম্পানীর সাথে যাবতীয় সুবিধা নিয়ে আলোচনা করে।

ঘ) কোম্পানীর দুর্বলতা কখনও লিডাররা পরিবেশকদের বুঝতে দেননা কারণ এতে নিজেদের ক্ষতিই বেশী মনে করেন।

ঙ) পরিবেশকদের ঝামেলা এড়িয়ে যাওয়ার জন্য লিডাররা অনেক সময় ব্যস্ততা দেখায়।

চ) লিডাররা ভুলে যায় তাদের টীমে অনেক বেশী জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান পরিবেশক তার টীমে থাকতে পারে যারা কিনা সহজে অনেক কিছূ বুঝে নেয়। এজন্য অনেক ভাল লিডার ঝরে যায়।

ছ) হাল আমলে কিছু লিডারের নিকট থেকে ‘গেম খেলার’ কথা শুনা যায়, বিষয়টি অবশ্যই নেতিবাচক প্রভাব ফেলে পরিবেশক ও ক্রেতাদের উপর। এমএলএম ব্যবসায় যারা গ্যাম্বলিং এর সন্ধানে থাকে তারা শুধু নিজেদের সর্বনাশ করছে না বরং পুরো সিস্টেমের সর্বনাশ করছে।

জ) অনেক লিডাররা নতুন নতুন কোম্পানীর সন্ধানে থাকে এতে নতুন করে সেটআপ দেয়ার সুযোগ পায় এবং নতুন কোম্পানীতে আপ-লাইনারদের ডাউনলাইনার করার সুযোগ থাকে।

লিডারদের যা করণীয়ঃ

1)      ক্রেতা ও পরিবেশকদের সঠিক দিক নির্দেশনা প্রদান কোম্পানীর যাবতীয় তথ্য সরবরাহ করা লিডারের দায়িত্ব।

2)      টীম বা দলসমূহ যাতে নিয়মিত টীম মিটিং করে কার্যক্রম সচল রাখে এজন্য টীম লিডারদের সাথে সিনিয়র লিডারদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখতে হবে।

3)      লিডারদের অবশ্যই বিনয়ী হতে হবে। পরিবেশক বা ক্রেতাদের সমস্যা বা অভিযোগসমূহ সুন্দরভাবে নিষ্পত্তির মাধ্যমে লিডারগণ প্রত্যেকের আস্থা অর্জন করেন।

4)      আজকে এক কোম্পানী আবার দুইদিন পর অন্য কোম্পানী এমন মনোভাব লিডারদের থাকা অনুচিত। আপনার এমন কাজের জন্য আপনার টীমের সদস্যদের নিকট আপনি স্বার্থপর বিবেচিত হবেন।

5)      কখনো ক্রেতা বা পরিবেশকদের এড়িয়ে যাবেননা। আপনার সীমাবদ্ধতার কথা জানিয়ে দিন। মনে রাখবেন হেল্পলাইন সবসময় লিডারদের ভাল ও উঁচু অবস্থানে দেখতে পছন্দ করে।

6)      কোম্পানীতে কর্মরত প্রত্যেকে ক্রেতা-পরিবেশকের সাথে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। আপনার টীমের ও টীমের বাইরের পরিবেশকরা আপনাকে অনুসরণ করবে। তাদের আপনার আপনার ডুপ্লিকেট করে তুলুন। তবে মনে রাখবেন আপনার শেখানো পথেই তারা হাঁটবে। ভুল পথ দেখাবেন নিজেই সমস্যায় পড়বেন।

7)      কোন কিছু বাড়িয়ে বলতে যাবেন না কারণ বাড়িয়ে বলাটাও মিথ্যে, যেমনঃ অনেকে বলেন আমাদের কোম্পানীর মালিকের ঢাকায় ৫টি বাড়ী আছে প্রকৃতপক্ষে বাড়ীর সংখ্যা ১টি। আবার অনেকে বলেন আমাদের কোম্পানীর পরিবেশক সংখ্যা ৫লক্ষ মূলত আছে ২লক্ষ। এভাবে বাড়িয়ে বলা মিথ্যে, আজ না হয় কাল আপনার ডাউনলাইন বা প্রসপেক্ট যখন জানবেন তখন আপনার উপর তার বিশ্বাস শূন্যের কোটায় মেনে আসবে। মিথ্যের ফল কখনো ভাল হয় না।

 অধ্যায় আট

ইতিবাচক মনোভাব সাফল্যের পথ তৈরী করে

ইতিবাচক মনোভাব ও নেতিবাচক মনোভাব সম্পন্ন মানুষ সম্পর্কে আমরা প্রত্যেকে কম বেশী অবগত। আরেকটু পরিষ্কার হওয়ার জন্য বলা যায় – ইতিবাচক মনোভাব সম্পন্ন মানুষ ধৈর্য্যশীল, আত্নবিশ্বাসী, নৈতিক মূল্যবোধ সম্পন্ন, পরের সাফল্যে সদা সন্তুষ্ট। অন্যদিকে নেতিবাচক মনোভাব সম্পন্ন মানুষ পরশ্রীকাতর, অহংকারী, নেতিবাচক মনোভাব সম্পন্ন মানুষ সব সময় সমালোচনা করার জন্যে প্রস্তুত থাকে, কারো সফলতাকে সহজভাবে মেনে নেয় না বরং বির্তকিত কথাবার্তায় জড়িত হয়। চার পাঁচজন লোকের কোন আলোচনা পর্যবেক্ষণ করলেই সহজে নেতিবাচক ও ইতিবাচক মানুষগুলোকে পৃথক করতে পারবেন। নেতিবাচক মনোভাব সম্পন্ন মানুষ কোন সমাধানে সন্তুষ্ট হননা, অন্যদের চেয়ে বেশী কথা বলতেই তাদের বেশী পছন্দ। অন্যদিকে ইতিবাচক মনোভাবের কিছু বাড়তি সুবিধা পাওয়া যায়। যে কোন কাজে অন্যদের সহযোগিতা পাওয়া যায়। একজন ইতিবাচক মনোভাব সম্পন্ন মানুষ অনেকগুলো মানুষের মাঝে কর্মস্পৃহা তৈরী করতে পারে। বেশ কিছুদিন আগের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাগুলোর খবর নিত্য পড়ে আসছিলাম। এবার বেশ কিছু ব্যতিক্রম উদ্যোগ নজরে এলো যা অনেকেরই নজর কেড়েছে কয়েকটি এলাকার মানুষ নিজেদের উদ্যোগে প্রায় আট কি:মি: বাঁধ নির্মাণ করেছে। এমন নির্মাণের উদ্যোক্তা ও অংশগ্রহণকারীরা ইতিবাচক মনোভাব সম্পন্ন যা সকলকে সংঘবদ্ধ হতে সাহায্য করেছে। আমাদের ইতিবাচক ভাবনা আমাদেরকে প্রাকৃতিক ঝুঁকি থেকেও রক্ষা পেতে সাহায্য করে এর প্রমাণ যথেষ্ট রয়েছে। প্রাপ্তি যত ক্ষুদ্র্র হোক না কেন ইতিবাচক মনোভাব ভবিষ্যতে বড় প্রাপ্তির জন্য প্রত্যাশা বাড়িয়ে তোলে। মানসিক গঠন যেমন হবে মনোভাব সেরুপ ফল প্রদান করবে। নেতিবাচক মনোভাব সম্পন্ন মানুষ অতীতের কর্মকান্ড ও অবস্থাকে দায়ী করে। যেমন – বখে যাওয়া তরুণ তার পরিনতির জন্য মাতা পিতাকে দায়ী করে। ইতিবাচক মনোভাব সম্পন্ন তরুণ অতীতকে দায়ী না করে অতীতের ভুল- ভ্রান্তি হতে শিক্ষাগ্রহণ করে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যায়।

সমাজের অল্প শিক্ষিত মানুষ সমস্যা তৈরী করে বেশী। তারা নিজেদের শিক্ষাগত যোগ্যতাকে অধিক মূল্যায়ন করে বেছে কাজ করতে চায়। পাঠ্যপুস্তক ছাড়াও পরিবেশ থেকে শিক্ষাই মানুষের মনোভাব পরিবর্তনে ভূমিকা রাখে। এছাড়াও ইতিবাচক মনোভাব গঠনে আপনি কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনঃ

® আপনি সর্বদা ভাল ও মঙ্গলজনক চিন্তায় মগ্ন থাকুন। একটি ভাল কাজ অন্যএকটি ভাল কাজের পথ তৈরী করে।

® সব শ্রেণী ও পেশার মানুষের সাথে সহজে মিশে যাওয়ার অভ্যাস করুন।

® পারিবারিক ও সামাজিক কাজে পূর্বের চেয়ে বেশি অংশ গ্রহণ করুন।

® সব সময় সৃষ্টিশীল কাজে ব্যস্ত থাকুন।

® অন্যের সাফল্যে উৎসাহিত করুন, এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা দিন।

® আপনার অধঃস্তন ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে সুসর্ম্পক বজায় রাখুন। সময় ও কাজের প্রতি    গুরুত্ব দিন।

® নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সম্পন্ন মানুষগুলোকে এড়িয়ে চলুন যতটা সম্ভব।

® নিজের ভুলের জন্য অনুশোচনা করুন। পূনরায় ভুল না করার জন্য সর্তক থাকুন।

® কাজ দ্রুত শেষ করার অভ্যাস করুন। দীর্ঘসূত্রীতা নেতিবাচক মনোভাবের জন্ম দেয়।

® অন্যের সমালোচনা থেকে বিরত থাকুন। অন্যেরভুল সহজভাবে দেখিয়ে দিন।

® যারা সমাজ ও দেশের অকল্যাণ করছে তাদের বাধা দিন। কারন তারা এখন অন্যের ক্ষতি করছে। আগামী দিন আপনারও ক্ষতি করবে নিশ্চিত।

যে কোন কাজে সফলতার জন্য ইতিবাচক মনোভাব বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে যা শতভাগ সত্য। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসায় জড়িত সকল লিডার ও ডিষ্টিবিউটর ইতিবাচক মানসিকতা ধারন করে পরিবেশ থেকে শিখে এবং নিয়মিত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। অর্থনৈতিক স্বনির্ভর হয়ে উঠার জন্য ইতিবাচক এমএলএম পরিবেশ অপরিহার্য।


অধ্যায় নয়

বাইনারী ম্যাজিক  পদ্ধতি বিশ্লেষণ

মাল্টিলেভেল মার্কেটিং পদ্ধতিতে যে সব কমিশন প্লান জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে তার মধ্যে বাইনারী প্ল্যান অন্যতম। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নেটওর্য়াক মার্কেটিং বলতেই অধিকাংশ মানূষ মনে করে বাইনারী প্ল্যান। বিশ্বের খ্যাতনামা অনেক প্রতিষ্ঠানই ব্যালেন্স বাইনারী কিংবা পেয়ার বাইনারী  অনুসরণ করে যদিও আমাদের দেশে বিভিন্ন কোম্পানিগুলো ভিন্ন ভিন্ন লেভেল কমিশন প্রদানের মাধ্যমে ভিন্ন মাএার বাইনারী প্ল্যান গঠন করে যা অধিকাংশ ক্ষেত্রে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

সাধারণ বাইনারী প্ল্যানে দুইটি পক্ষ থাকে যেমন- বামপক্ষ ও ডানপক্ষ। একজন ডিস্ট্রিবিউটর তার ডাউনে নতুন দুজনকে স্পন্সর করাতে পারে। অনুরুপভাবে প্রত্যেকে 1´1, 2´2, 4´4 এভাবে স্পন্সর করাতে থাকে। কমিশন প্রদানের ক্ষেত্রে পয়েন্ট বা পন্যের মূল্য অনুযায়ী এক একটি প্রতিষ্টান এক একটি নিয়ম অনুসরণ করে। যে সব সুবিধাসমূহ বাইনারী পদ্ধতি হতে পাওয়া যায় তা হলো:

ক) বাইনারী পদ্ধতিতে একে অন্যের হাত ধরে আসে। একের অর্জিত পয়েন্টে অন্যদের কাজে আসে।

খ) সাধারণত অন্য কমিশন প্ল্যান গুলোতে নির্দিষ্ট লেভেল পর্যন্ত কমিশন লাভ করে বিধায় এসব প্ল্যানে আপলাইনরা নির্দিষ্ট লেভেলের পর ডাউনলাইনদের খুব একটা খোঁজ নেয় না অন্যদিকে বাইনারী প্ল্যানে টপ লেভেল হতে বটম লেভেল পর্যন্ত প্রত্যেক ডিস্ট্রিবিউটর একে অন্যের সাথে রিলেশন বজায় রাখে।

গ) বাইনারী প্ল্যানে পণ্য ও স্পন্সরিং এর উপর গুরুত্বারোপ করে বিধায় পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়ন ক্রম বৃদ্ধি পায়।

ঘ) বাইনারী পদ্ধতিতে এক বা একাধিক বিজনেস গঠন করে অধিক আয় করা যায়। যেমন- একটির পরিবর্তে তিনটি বা সাতটি সেন্টার নেওয়াকে  Multi Center Bainary বলা হয়। এক্ষেত্রে একজন ডিস্ট্রিবিউটর অনেকগুলো হাতে একসাথে কাজ করতে পারে। ফলে ব্যালেন্সিং হলেও যে কোন সেন্টারে আয় হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

ঙ) এ পদ্ধতি সহজ ও সাপ্তাহিক কমিশন প্রদান করে বিধায় এটি সকলের নিকট গ্রহন যোগ্যতা পায়।

চ) বাইনারী প্ল্যানে ইচ্ছে করলেই অতিরিক্ত হাত (বাম পক্ষ বা ডান পক্ষ ব্যতীত) বাড়ানোর সুযোগ নেই। নতুন কাউকে স্পন্সরিং করতে চাইলে ডাউন লাইনের ডাউনেই করতে হয়। এজন্য আপ-লাইন ও ডাউন লাইনারদের মাঝে সম্পর্ক গভীরতর হয়।

বাইনারী প্ল্যানে যে কোন ডিস্ট্রিবিউটর সহজে বুঝতে পারে এবং স্বপ্ল সময়ে সাফল্যর্জনে সক্ষম হয়। এ পদ্ধতিতে বিক্রয়ের চেয়ে স্পন্সরিং বা নতুন ক্রেতা অন্তভূক্তি অধিক ফলপ্রসূ। বাইনারী পদ্ধতিতে যে সব বিষয়গুলোর প্রতি দৃষ্টি দেয়া উচিত তা হলো।

ক) নিয়মিত প্রশিক্ষণ গ্রহণ ও নিজ নিজ গ্রুপের তত্ত্বাবধান।

খ) ডাউন লাইন ডিস্ট্রিবিউটরদের ডুপ্লিকেট করে গড়ে তোলা। কারণ প্রত্যেকের ডাউনে দু’জন সক্রিয় নেটওয়ার্কারই যথেষ্ঠ।

গ) বাইনারী পদ্ধতির সাথে ব্যালেন্সিং বিষয়টি জড়িত। এজন্য প্রত্যেকের ডাউনে দু’জনকে স্পন্সর করানো ছাড়াও নতুন ডিস্ট্রিবিউটর সাইন আপ করা প্রয়োজন হয়। বিশেষজ্ঞ যখন যে কোন এক পার্শ্বের কেউ নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে।

ঘ) ডাউন লাইনে যারা স্পন্সরিং-এ ব্যর্থ হয় তারা ব্যক্তিগত বিক্রয় বা গ্রুপ সেলস/দলীয় বিক্রয়ের মাধ্যমে যাতে কমিশন লাভে সমর্থ হয় সেই বিষয়ে আপলাইন লিডারদের লক্ষ্য রাখা বাঞ্চনীয়।

ঙ) যারা মনে করে একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর নিজের নেট স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলবে তারা ভূলের মধ্যে আছে। নিয়মিত পরিচর্যা ব্যতীত যে কোন নেট অল্প সময়ের মধ্যে দূর্বল হয়ে পড়ে।

বাইনারী ম্যাজিক হলো এর দ্বারা অতিঅল্প সময়ে বিশাল আকৃতির টীম গঠনে সক্ষম। সফলতা নির্ভর করে কে কতটা ব্যালেন্স করে এগোতে পারে।

অধ্যায় দশ

‘ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণ আইন কি এমএলএমআইন তৈরীতে সহায়ক হবে ?

১লা এপিল ২০০৯, সংসদে পাস হলো ‘ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণ আইন’। এখনো পর্যন্ত এ আইনের প্রয়োগ তেমন দেখা না গেলেও খুব শীঘ্রই এর কার্যকারিতা হবে বলে আমরা আশাবাদ ব্যক্ত করছি। প্রথমেই একটি বিষয় বলে রাখছি তা হলো যদিও ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণ আইনে এমএলএম প্রতিষ্টানের বিষয় স্পষ্ট কিছু বলা হয়নি তবু এ আইনে এমএলএম প্রতিষ্টানগুলো পড়ে কারন এসব প্রতিষ্টান পণ্য ক্রয় বিক্রয় ও মজুদের সাথে জড়িত। তবে আমরা এমন আশাবাদ ব্যক্ত করতে পারি যে শীঘ্রই এমএলএম আইন তৈরী হবে এবং যা ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণ আইনের সাথে অবশ্যই সংগতিপূর্ণ হবে। শূরুতেই ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণ আইন সর্ম্পকে কিছু ধারনা লাভের চেষ্টা করি। আইন অনুযায়ী, নগদে বা বাকীতে পণ্য বা সেবা বিক্রি করে ভোক্তা বা ক্রেতাদের ঠকালে শাস্তি পাবে বিক্রেতারা যেমন ওজনে কম দেওয়া, দাম বেশি রাখা, মেয়াদো্ত্তীর্ণ মালামাল বিক্রি করার মতো অপরাধের জন্য অর্থদন্ড বা কারাদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন দোষী বিক্রেতা। দোষীদের সর্বোচ্চ তিন বছরের জেল এবং দুই লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে এই আইনে। ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণ, ভোক্তা অধিকার বিরোধী কার্য প্রতিরোধ ও তৎসংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে বিধানের জন্যই এই আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে। এই আইনের আওতায় ভোক্তা অধিকারবিরোধী উল্লেখযোগ্য অপরাধগুলো হচ্ছেঃ

  • নির্ধারিত মূল্য অপেক্ষা অধিক মূল্যে কোনো পণ্য, ঔষধ বা সেবা বিক্রি করা বা বিক্রির প্রস্তাব দেওয়া;
  • অবৈধভাবে কোনো পণ্য  বা ঔষধ মজুদের মাধ্যমে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়ানো;
  •  জ্ঞাতসারে ভেজাল পণ্য বা ওষধ বিক্রি করা বা বিক্রির    প্রস্তাব করা;
  • খাদ্যপণ্যের সঙ্গে স্বাস্থ্যহানিকর পণ্য মিশিয়ে বিক্রি করা বা বিক্রির প্রস্তাব করা;
  • পণ্য বা সেবার অসত্য বা মিথ্যা বিজ্ঞাপন দ্বারা ক্রেতাদের প্রতারিত করা;
  • ওজনে কম দেওয়া বা কম সরবরাহ করা;
  • বাটখারা বা ওজন পরিমাপক যন্ত্র সঠিক না থাকা;
  • নকল পন্য বা ঔষধ প্রস্তুত বা উৎপাদন করা;
  • মেয়াদ উত্তীর্ণ পন্য বা ঔষধ বিক্রি করা বা বিক্রির প্রস্তাব করা;
  • একচেটিয়া ব্যবসার মাধ্যমে অন্যায্য মুনাফা অর্জন করা;
  • পণ্য বা সেবা গ্রহীতার জীবন বা নিরাপত্তা বিপন্ন হতে পারে এমন কোনো কাজ করা।

কোনো ভোক্তা যদি মনে করেন, বিক্রেতা ভোক্তার অধিকারবিরোধী কাজ করেছেন, তাহলে তিনি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তর বা সরাসরি আদালতে অভিযোগ করতে পারবেন। তবে ঘটনার ১০দিনের মধ্যে মহাপরিচালক কিংবা অধিদপ্তরের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ না করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। ভোক্তা অধিকার খর্ব করলে পণ্য বা সেবার সংশ্লিষ্ট বিক্রেতা বা উৎপাদকের বিরুদ্ধে যেসব শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে তাহলোঃ

* ধার্যকৃত মূল্যের চেয়ে বেশী দামে পণ্য, ঔষধ বা সেবা বিক্রি বা বিক্রির প্রস্তাব করলে এক বছর কারাদন্ড বা অনধিক পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদন্ড।

* অবৈধভাবে পণ্য বা ঔষধ মজুদ করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে দাম বাড়ালে অনূর্ধ্ব তিন বছর কারাদন্ড বা অনধিক দুই লাখ টাকা অর্থদন্ড।

* ভেজাল জিনিস বিক্রি করলে অনূর্ধ্ব তিন বছর কারাদন্ড বা অনধিক দুই লাখ টাকা অর্থদন্ড।

* খাদ্যদ্রব্যে স্বাস্থ্যহানিকর উপাদান মেশালে অনূর্ধ্ব তিন বছর কারাদন্ড বা অনধিক দুই লাখ টাকা অর্থদন্ড।

* পণ্য বা সেবা বিক্রির জন্য অসত্য বা মিথ্যা বিজ্ঞাপন মাধ্যমে ভোক্তাকে প্রতারিত করলে অনূর্ধ্ব এক বছর কারাদন্ড বা অনধিক দুই লাখ টাকা অর্থদন্ড।

* যে জিনিস সরবরাহ করার কথা হুবহু সে জিনিস বা সেবা না দিলে অনূর্ধ্ব এক বছর কারাদন্ড বা অনধিক পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদন্ড।

* প্রতিশ্রুত ওজন অপেক্ষা কম দিলে অনূর্ধ্ব এক বছর কারাদন্ড বা অনধিক পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদন্ড।

* দোকান বা ব্যবসা প্রতিষ্টানে ওজন পরিমাপের বাটখারা বা ওজন পরিমাপক যন্ত্র সঠিক না থাকলে অনূর্ধ্ব এক বছর কারাদন্ড বা অনধিক পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদন্ড।

* নকল পণ্য প্রস্তুত বা উৎপাদন করলে তিন বছর কারাদন্ড বা অনধিক দুই লাখ টাকা অর্থদন্ড।

* মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বা ঔষধ বিক্রি বা বিক্রির প্রস্তাব করলে অনূর্ধ্ব এক বছর কারাদন্ড বা অনধিক পঞ্চাশ হাজার লাখ টাকা অর্থদন্ড।

* বিধিনিষেধ অমান্য করে সেবা গ্রহীতার জীবন বা নিরাপত্তা বিপন্ন হতে পারে এমন কাজ করলে অনূর্ধ্ব তিন বছর কারাদন্ড, বা অনধিক দুই লাখ টাকা অর্থদন্ড।

* সেবা প্রদানকারীর অবহেলা, দায়িত্বহীনতা বা অসর্তকতায় সেবা গ্রহীতার অর্থ, স্বাস্থ্য বা জীবনহানি ঘটলে অনূর্ধ্ব তিন বছর কারাদন্ড, বা অনধিক দুই লাখ টাকা অর্থদন্ড।

* আইনি বাধ্যবাধকতা অমান্য করে দোকান বা প্রতিষ্টানের সেবার মূল্য তালিকা প্রর্দশন না করলে এক বছর কারাদন্ড বা অনধিক পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদন্ড।

এখানে উল্লেখ্য যে , আমরা ভোক্তারা সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হই অস্থিতিশীল বাজার দ্বারা, সরকার বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করেও এর সঠিক বিহীত করতে পারছেনা। অনেকগুলো কারণের একটি হলো সাধারন ক্রেতা বা ভোক্তাদের সচেতনতা। ভোক্তা আইনের সঠিক প্রয়োগ ও সাধারন মানুষের এ আইন সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি না হলে ফলপ্রসু করতে সময়সাপেক্ষ হবে।

এমএলএম শিল্পে সঠিক নীতিমালার প্রয়োজনীয়তা এখন সময়ের দাবী মাত্র। দেশের প্রশাসন এর প্রয়োজনীয়তা অনুভব তেমন না করলেও ভোক্তা বা  ক্রেতা, ডিষ্টিবিউটর ও নেটওয়ার্কারদের স্বার্থে এমএলএম আইন প্রণয়ন অত্যন্ত জরুরী। দেশের আনাচে কানাচে গড়ে উঠা এমএলএম বা নেটওয়ার্ক মাকের্টিং প্রতিষ্টানসমূহ নিয়ন্ত্রনের কোন সংস্থা প্রতিষ্টিত হয়নি যা আমাদের জন্য খুবই  হতাশাজনক। যার ফলে কিছু ভুয়াঁ প্রতিষ্টান নেটওয়ার্ক মাকের্টিং এর কথা বলে সাধারন ক্রেতাদের কাছ থেকে টাকা আত্নসাত করার কাজে লিপ্ত। এসব প্রতিষ্টানসমূহ রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় এসব অবৈধ ব্যবসা করার সুযোগ পায়। যেসব প্রতিষ্টানের কারনে এমএলএম ব্যবসার প্রতি সাধারন মানুষের আস্থা নষ্ট হচ্ছে। বেকার সমস্যায় র্জজরিত এদেশের লক্ষ লক্ষ যুবকের আস্থা অর্জনে ব্যর্থ হইবার পরও এখনও অসংখ্য যুবক নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্টান খুঁজে বেড়ায়। কিন্তু অধিকাংশ প্রতিষ্টানই অল্প সময়ে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনে চেষ্টায় ব্যস্ত। ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন হওয়ায় আমরা কিছুটা হলেও আশ্বস্ত এজন্য যে এ আইনটি এমএলএম বা নেটওয়ার্ক মার্কেটিং প্রতিষ্টানসমূহকে এর আওতায় নিয়ে আসবে। পাইকারী বাজার থেকে পণ্য কিনে এমএলএম এর কথা বলে বিক্রয় করা, স্বপ্ল মূল্যের পণ্য অধিক দামে বিক্রয়ের প্রবণতা ইত্যাদি কমবে। কমিশন লাভের প্রলোভন দেখিয়ে পণ্য মজুদ করানো। এসব বন্ধের অন্যতম উপায় সাধারন ডিষ্টিবিউটরদের সচেতনতা। সাধারন ডিষ্টিবিউটররা সচেতন না হলে এ ধরনের ভূয়াঁ নেটওয়ার্ক মাকের্টিং প্রতিষ্টান গড়ে উঠবেই। আইনি ব্যবস্থা গ্রহণই এদের কাছ থেকে বেকার যুবকদের রক্ষার একমাত্র উপায়। আমরা খুবই আশাবাদী যে ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণ আইন এর পাশাপাশি এমএলএম আইন প্রণয়ন করে দেশের এমন একটি শিল্পকে বাচাঁতে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

অধ্যায় এগার

সাফল্যের জন্য চাই অধ্যবসায়, কর্মপরিকল্পনা কঠোর পরিশ্রম

দীর্ঘ আঠার থেকে বিশ বছর শিক্ষাজীবন সমাপ্ত করে যখন কেউ আরো দু’চার বছর ঘুরে একখানা ভাল চাকুরী জোটাতে সমর্থ হয় না তাদের কাছে ‘সাফল্য’ শব্দটির পরিবর্তে সাধারণভাবে বেঁচে থাকাই স্বপ্ন মনে হয়। অন্যদিকে মাত্র পাঁচ-সাত বছরের শিক্ষাজীবন সমাপ্ত করে অধ্যবসায়, অভিজ্ঞতা ও কঠিন পরিশ্রমের মাধ্যমে সাফল্যের সাথে অর্জন করেন শিল্পপতি, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ইত্যাদি পদবী, আপনার শুরু যেখান থেকেই হোক না কেন সাফল্য অর্জনের জন্য প্রয়োজন অধ্যবসায়, কর্মপরিকল্পনা ও কঠোর পরিশ্রম। কথায় আছে অধ্যবসায় সাফল্যের চাবিকাঠি। আপনার পেশা যাই হোক না কেন আপনাকে প্রথমেই অধ্যবসায়ের দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে, চাকুরীতে সমস্যা সৃষ্টি হলেই তা দ্রুত পরিবর্তনের ভাবনা মাথায় না এনে সমস্যা মোকাবেলার মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে। অনুরূপভাবে ব্যবসায় সাময়িক ক্ষতির সম্মুখীন হলে তা ধৈর্য্য সহকারে মোকাবেলা করতে হবে। সাফল্য লাভের জন্য অধ্যবসায় যেমন  গুরুত্বপূর্ণ তেমনি গুরুত্বপূর্ণ কর্মপরিকল্পনা কারন কর্মপরিকল্পনা ব্যতীত সুষ্ঠভাবে কাজ সম্পাদন সম্ভব হয় না। পরিকল্পনা বিহীন কাজ অন্ধকারে ঢিল ছুঁড়ার মতই। যতটুকু সম্ভাবনা থাকে সফল সম্পাদনের তার চেয়ে বেশি সম্ভাবনা থাকে ব্যর্থ হওয়ার।

অনেক ক্ষেত্রে সুপরিকল্পিত কাজ সময়সাপেক্ষ হলেও তা সফল হয় বেশি। যতটুকু ঝুঁকি বহন করতে সক্ষম ততটুকু ঝুঁকি গ্রহণ সুষ্ঠ পরিকল্পনার অংশ বিশেষ। অনুরুপভাবে ক্যারিয়ার গড়ার জন্য সুপরিকল্পিত উপায়ে এগোতে হবে। সফলতার অন্য এক পূর্বশর্ত পরিশ্রম। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পরিশ্রমের বিকল্প নেই। পরিশ্রম ব্যতীত ভোগ তখনই সম্ভব যখন উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পদের প্রাচুর্য থাকে কিংবা কোটি টাকার লটারী জয় করা যায়।

কাজ যেমনই হোক না কেন ফলপ্রসু করতে চাই অধ্যবসায়, সুপরিকলল্পনা ও কঠোর পরিশ্রম। মাল্টিলেভেল মার্কেটিং পদ্ধতিতে সফলতা লাভের জন্য অধ্যবসায় ও পরিশ্রমের বিকল্প নেই। ফুলটাইম নেটওয়ার্ককারগণ সাধারণত বিনিয়োগ ঝুঁকি ছাড়াই দীর্ঘমেয়াদী আয়ের সুযোগ পায়, প্রয়োজন অধ্যবসায় ও কঠোর পরিশ্রম। শুরুতে পার্টটাইম সময় দিয়ে ধীরে ধীরে ফুলটাইম সময় প্রদান করে অনেকেই এ ব্যবসায় সফল হয়েছেন। অধিক সময় প্রদানের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ প্রদেয় সময়কে সঠিকভাবে কাজে লাগানো। মাল্টিলেভেল মার্কেটিং পদ্ধতিতে এমন অসংখ্য দৃষ্টান্ত রয়েছে যেখানে নেটওয়ার্কারগণ স্বল্প সময়ে রয়েলটি আয় নিশ্চিত করেছেন। এসকল দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে আমরাও সফলতা অর্জন করতে অক্ষম হতে পারব। কেউ এমন মনে করার কোন কারন নেই যে যারা আগে কোম্পানীতে জয়েন করেন তারাই এগিয়ে থাকে, এটা সত্য যে যারা পরিকল্পিত উপায়ে প্রথম থেকেই কাজ করে তারা এগিয়ে থাকে কিন্তু অনেক পরে ব্যবসা আরম্ভ করেও অনেকেই সবোর্চ্চ আসন লাভ করে। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসায় তারাই জয়ী হয় যারা ব্যবসাটিকে মনে প্রাণে গ্রহণ করেছে। বিনয়ের সাথে কাজ করে এগিয়ে যেতে হবে, পরিশ্রম করার মানসিকতাও থাকতে হবে। যদি মনে করেন মাল্টিলেভেল মার্কেটিং ব্যবসায় সহজেই সবকিছু হয়ে যাবে তবে তা অসত্য। অন্যান্য বিষয়ের মতো তীব্র বাসনা ও অধ্যবসায় আপনাকে সাফল্যের সিংহাসনে বসাবে। অবশ্যই আপনাকে নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এর সমগ্র বিষয়বস্তু বিস্তারিত জেনে এগোতে হবে।

 

অধ্যায় বার

মাল্টিলেভেল মার্কের্টিং পদ্ধতিতে হারবালপণ্যের সম্ভাবনা

মাল্টিলেভেল মার্কেটিং পদ্ধতিতে হারবাল পণ্য ও ঔষধ সামগ্রী সবচেয়ে সম্ভাবনাময় একটি খাত। বিশ্বের মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কিংবা নেটওয়ার্ক মার্কেটিং কোম্পানীগুলোর অধিকাংশই  হারবাল পণ্য সামগ্রী এবং ফুড সাপ্লিকেন্ট্স বাজারজাত করে। এসব প্রতিষ্টান জীবনরক্ষাকারী ঔষধ ও পথ্য বিপণনের পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টির দরুন বাজারের অধিকাংশ শেয়ার নিয়ন্ত্রণ করছে। একারণে এসব প্রতিষ্ঠানের কমিশন প্ল্যান যেমনই হোক না কেন বাজারে তাদের অবস্থান বরাবরই ভাল।

বর্তমানে আমাদের দেশেও বেশ কিছু এমএলএম  প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে এবং অধিকাংশই ঔষধ, হারবাল পণ্য ও প্রসাধনী এবং খাদ্য সামগ্রী বাজারজাত করছে। আমাদের দেশে বরাবরই হারবাল পণ্যের চাহিদা ছিল কিন্তু সঠিক বিপণন কৌশলের কারণে এর বাজার ভালভাবে গড়ে উঠেনি। এছাড়াও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী নকল ও ভেজাল ঔষধ বাজারজাত করে সাধারণ ক্রেতাদের হারবাল  পণ্যের প্রতি আস্থা নষ্ট করে।

এখনও যে পরিমাণ চাহিদা রয়েছে হারবাল কিংবা ঔষধি পণ্যের তা ধরে রাখার জন্য নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। এমনই একটি পরিকল্পনা ও তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার বলতে পারেন মাল্টিলেভেল মার্কেটিং। তবে ব্যবসা বৃদ্ধির জন্য পণ্যের মান কমিয়ে ডিস্টিবিউটরদের অধিক কমিশন প্রদানের প্রচেষ্টা অনেকটা আত্নঘাতী। কমিশনের পরিমাণ যেমন গুরুত্বপূর্ণ এর চেয়ে অধিক গুরুত্ব প্রদান করতে হবে পণ্যের গুণগত মানের উপর। কারণ উৎপাদনমূখী প্রতিষ্টানের প্রথম লক্ষ্য থাকে বেশী পণ্য সেল্স।

ভোক্তাদের প্রথম পছন্দ উন্নতমানের পণ্য আর বাড়তি আয়ের ব্যবস্থা তাদের অনুপ্রানিত করে। এজন্য দু’ধরনের ডিষ্টিবিউটর আমরা এ ধরনের প্রতিষ্টানে দেখতে পাইঃ

১। গুণগত মানের পণ্যের ক্রেতা যারা বাড়তি আয়ের প্রতি কিঞ্চিৎ আগ্রহী হয়।

২। চাকুরীপ্রার্থী যারা পণ্য বিক্রয়ের মাধ্যমে উর্পাজন করে।

পণ্যের মানের সাথে সংঙ্গতি রেখে মূল্য নির্ধারন না করলে ধীরে ধীরে পণ্যের ক্রেতা হারাতে হয় এবং ফুলটাইম ডিষ্টিবিউটরগণ বাজার প্রতিযোগীতার মুখোমূখী হয়। যেহেতু এখনও আমাদের দেশে এমএলএম তেমন প্রচার ও প্রসার লাভ করেনি সেহেতু অধিকাংশ ডিষ্টিবিউটর এক কোম্পানী থেকে অন্য কোম্পানীতে ব্যবসারম্ভ করার আগ্রহ দেখায়।

যেসব প্রতিষ্টান দীর্ঘদিন সুনামের সহিত ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে এমন প্রতিষ্টান এমএলএম পদ্ধতি অনুসরণ করলে সাধারন ক্রেতা / ডিষ্টিবিউটরগণের কোম্পানী পরিবর্তন হার কম হয়। অন্যদিকে ফুলটাইমাররা সুনাম অর্জনকারী প্রতিষ্টান আকঁড়ে ধরে রাখে সাফল্যের জন্য। যে সম্ভাবনার কথা বল্ছি তা হারবাল পণ্যকে দেশের মানুষের কাছে জনপ্রিয় করে তোলার পাশাপাশি বিদেশি বাজারে প্রবেশের সুযোগ করে দিবে। হার্বালাইফ ইন্টারন্যাশনাল, ইউজানা ও নিউস্কীন এন্টারপ্রাইজ ইত্যাদি অসংখ্য প্রতিষ্টান হারবাল পণ্য ও ঔষধ-পথ্য এমএলএম পদ্ধতিতে বাজারজাত করে বিশ্বব্যাপী সুনাম অর্জনে সক্ষম হয়েছে। দেশে এমএলএম নীতিমালার পাশাপাশি হারবাল ও ঔষধী পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্টানসমূহ গুনগত পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য নিজেদের মধ্যে স্বমন্বয় গড়ে তোলতে হবে। সম্ভাবনার আলোটুকু ধরে রাখার জন্য এমএলএম কোম্পানী, নেটওর্য়াকার, ডিষ্টিবিউটর ও সাধারন ক্রেতাদের একসাথে কাজ করতে হবে। ভালো প্রতিষ্টানগুলোকে বিভিন্ন সরকারী সুবিধা (যেমন ট্যাক্স হলিডে, ঋণ সুবিধা ইত্যাদি) প্রদান করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সুস্থ সমাজ ও জাতীয় উন্নয়নে এগিয়ে আসার সুযোগ করে দিতে হবে।

অধ্যায় তের

আপনার পছন্দের তালিকায় দেশীয়প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রাধান্য দিন

পৃথিবীতে আমরাই একমাত্র জাতি যারা ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছি। আমরাই একমাত্র জাতি যারা লাঙ্গল ধরা হাত দিয়ে অস্ত্র ধরে দেশকে স্বাধীন করেছি। দেশের প্রতি ভালবাসার অনন্য উদাহরণ রেখে গিয়েছেন আমাদের পূর্ব প্রজন্মরা কিন্তু আমাদের মধ্যে সেই ভালবাসা আর দেশপ্রেম নেই বললেও চলে। আমাদের জন্যই দেশ আর দেশের জন্যই আমরা। দেশকে নিয়ে ভাবতে হবে সবার আগে। আমার আর আপনার প্রতিটি কাজে দেশের কথা স্মরণ করলে দেশের কল্যাণ হবে, সমাজের কল্যাণ হবে এবং পরিবারের কল্যাণ হবে। যেহেতু আমার লেখাটাই মূলত নেটওয়ার্ক মার্কেটিং কেন্দ্রিক এজন্য কিভাবে ও কেন দেশীয় এমএলএম কোম্পানীগুলোকে প্রাধাণ্য দিব সে বিষয়ে এখন লিখছি। বেশ কিছু এমএলএম (বিদেশী) কোম্পানী বর্তমানে আমাদের দেশে কাজ করছে। এটা অবশ্যই আমাদের জন্য ইতিবাচক দিক কারণ দেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ বা বাণিজ্য না হলে দেশের উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যহত হয়। বিদেশী কোম্পানীগুলোর সাথে প্রতিযোগিতায় অবর্তীণ হয়ে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের মান উন্নয়ন করে এবং টিকে থাকার জন্য লড়াই করে। আমরা নিজেরাই দেখতে পাচ্ছি এমএলএম শিল্পের বিগত ৮-১০ বছর পূর্বের অবস্থা ও বর্তমান অবস্থা। এমএলএম শিল্পের পরিবর্তনের পাশাপাশি একজন পরিবেশক, নেটওয়ার্কার বা লিডার হিসেবে আমাদের কিছু দায়িত্ব আছে, এ দায়িত্বটুকু সামাজিক দায়বদ্ধতা কিংবা দেশের প্রতি কর্তব্য ধরে নিতে পারেন। লক্ষ্য করে দেখুন গত কয়েক বছর আগেও ডলার এতো সহজ ছিলনা আমাদের জন্য এখন যতটা সহজ। এগুলোর নাম হলো ভার্চুয়াল ডলার, ইন্টেলেকচুয়্যাল ডলার ইত্যাদি। টাকা দিবেন ডলার পাবেন আবার ৪০০ টাকা দিয়ে টুথপেস্ট কিনবেন ডলার ইনকাম করবেন। যেহেতু আপনাকে ডলার কামাতে হবে এজন্য অতিমূল্যবান! টুথপেস্ট বিক্রয় করতেই হবে- ‘সামর্থ্য না থাকলে একবেলা ভাত কম খাবেন তবুও এই অতিমূল্যবান টুথপেস্ট আপনার প্রয়োজন’। নেটওর্য়াক মার্কেটিংকে এতো জটিল করে নেয়ার কোন প্রয়োজন নেই। বিবেক দিয়ে অনুধারন করুন আপনি যা করছেন তা সঠিক কিনা তবেই সফল হবেন। কখনো অন্যের দায় কাঁধে নেবেননা, অন্যের নিকট দায়বদ্ধ হয়ে যখন ঋণী হয়ে যাবেন তখন নিজেকে আড়াল করতে মূল সড়ক ছেড়ে অলি-গলিতে হেঁটে বেড়াবেন। ডলার, পাউন্ড কিংবা রিঙ্গিতের পেছনে ছুটার প্রয়োজন নেই। কেউ আপনাকে মাসে ১ কোটি টাকা আয়ের স্বপ্ন দেখালেই ছুটে যাবেন না কারণ তারা ‘কইয়ের তেলেই কই ভাঁজবে’। ছুটবেন পদ্ধতির পেছনে, ছুটবেন মানসম্মত পণ্যের পেছনে (তবে অবশ্যই পণ্যটির মূল্য হবে ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে)। দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসার সুযোগ দিন, আপনার পছন্দের তালিকায় প্রথমে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাখুন, এটি আমাদের কর্তব্য। আমাদের আন্তরিকতা আর দৃঢ়তা থাকলে আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে বিশ্বব্যাপি সুনাম কুড়াতে পারবে। এতে পরিবেশকদের ভূমিকাই সবচেয়ে বেশী।